ভুয়া সার্টিফিকেটে দীর্ঘ ৩২ বছর এমবিবিএস ডাক্তার সেজে দাপটের সঙ্গে চিকিৎসা দিয়ে অবশেষে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে করিম লোহানী নামের এক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার।
এই সময়ে তিনি দেখেছেন অনেক রোগী, দিয়েছেন চিকিৎসা। করেছেন অসংখ্য সিজারিয়ান অপারেশন।
কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় আটক হলেন সেই ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার। তাকে আটকের পর কর্মস্থল ক্লিনিকটি করা হয়েছে সিলগালা।
সোমবার (২৯ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল বাজারের জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতালে ঘটেছে এমন ঘটনা। এই হাসপাতালে বছরের পর চিকিৎসা দিয়েছেন ওই ভুয়া ডাক্তার।
আটক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার করিম লোহানী উপজেলার চকপাড়া গ্রামের বাহাজ উদ্দীনের ছেলে। আগে পাবনায় ছিল তার বাড়ি।
বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম এবং বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।।
বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম বলেন, সোমবার সকালে ওই ভুয়া ডাক্তার একটি সিজারিয়ান অপারেশন করার পর নবজাতক মারা যায়। এ ঘটনায় সিজারের দায়িত্বরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন রোগীর স্বজনরা। বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যার পর পুলিশ নিয়ে ওই হাসপাতালে যাই। দেখতে পাই আরও একটি অপারেশন শেষ করে বের হচ্ছেন করিম লোহানী।
ডা. খুরশিদ আলম আরও বলেন, এরপর করিম লোহানীকে ডাক্তারির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি এলোমেলো উত্তর দেওয়ায় সার্টিফিকেট দেখতে চাই আমরা। তার সার্টিফিকেটটি যাচাই করার জন্য মেডিক্যাল বোর্ডের ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায়, অন্যের সনদে নিজের নাম জুড়ে দিয়েছেন। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন অন্যের সার্টিফিকেটে নিজের ছবি লাগিয়ে এমবিবিএস পাসের সার্টিফিকেট বানিয়েছেন। পরে তাকে আটক করে পুলিশ। সেই সঙ্গে তাকে আটকের পর ওই ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. খুরশিদ আলম বলেন, ওই ব্যক্তি ২০১৯ সালে রাজশাহীতে আটক হয়ে তিন মাস জেল খেটে বের হন। এছাড়া ওই ক্লিনিক মালিক জাহাঙ্গীর আলমও এমবিবিএস পাস না করে নিজের নামের পাশে ডাক্তার লিখে অবৈধ চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এসব কারণে ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, মঙ্গলবার ওই ভুয়া ডাক্তারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।