বেলারুশের সাংবাদিক র্যামন প্রোতোশেভিচকে কমান্ডো স্টাইলে ছিনতাই করে নিয়ে এসেছে বেলারুশ সরকার। গ্রিস থেকে লিথুয়ানিয়াগামী রায়ানএয়ারের একটি বিমানে ছিলেন বেলারুশের সাংবাদিক এবং আন্দোলনকর্মী রোমান প্রোতাশেভিচ। বোমা হামলার হুমকি দিয়ে বিমানটিকে তার গতিপথ পরিবর্তনে বাধ্য করা হয়।
বেলারুশ কর্তৃপক্ষ মি. প্রোতাশেভিচের যে ভিডিও প্রকাশ করেছে তা দেখে মনে হচ্ছে সেটি মিনস্ক বিমানবন্দরে আটক করার পর তাকে চাপ দিয়ে রেকর্ড করা হয়েছে। ওই রেকর্ডিং-এ সাংবাদিক মি. প্রোতাশেভিচ বলেছেন তিনি সুস্থ আছেন এবং বেলারুশ তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করেছে তিনি সেই অপরাধ স্বীকার করেছেন।
তবে দেশটির প্রধান বিরোধী নেতাসহ অন্য আন্দোলনকারীরা এই ভিডিওর সমালোচনা করেছে এবং বলেছেন মি. প্রোতাশেভিচকে চাপ দিয়ে এই স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বেলারুশ কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপকে ‘জঘন্য’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, ‘এটা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক ভিন্ন মতের প্রতি নির্লজ্জ আক্রমণ’।
এই ঘটনায়, ইউরোপের প্রধান বিমান সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই বেলারুশের আকাশসীমার ভেতর তাদের বিমান চালানো বন্ধ করতে শুরু করেছে। তারা তাদের ফ্লাইটের রুট ইতোমধ্যেই বদলে দিয়েছে। ব্রিটেন বেলারুশের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স বেলাভিয়ার যুক্তরাজ্যে বিমান চলাচলের পারমিট স্থগিত করে দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সদস্য দেশগুলোকে একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
পোল্যান্ড ঘোষণা করেছে তাদের জাতীয় এয়ারলাইন্স এলওটির কোনো বিমান বেলারুশের আকাশে চলাচল করবে না। ইউক্রেনও ঘোষণা করেছে বেলারুশের সঙ্গে তাদের সব বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। মি. প্রোতাশেভিচ ‘নেকস্টা’ নামে একটি সংবাদ মাধ্যমের সাবেক সম্পাদক।
নেকস্টার একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল আছে। তিনি ২০১৯ সালে বেলারুশ ছেড়ে চলে যান এবং লিথুয়ানিয়ায় নির্বাসনে থাকছিলেন। সেখান থেকে তিনি বেলারুশের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশ করতেন। এরপর তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ এবং দাঙ্গায় উস্কানি দেবার অভিযোগ আনা হয়।
নির্বাচনের সময় ‘নেকস্টা’ বেলারুশে সরকারবিরোধী পক্ষের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনে মি. লুকাশেঙ্কো বিজয়ী হন, যদিও ব্যাপকভাবে অভিযোগ আনা হয় ওই নির্বাচনে তিনি কারচুপি করেছেন।
সাংবাদিক র?্যামন প্রোতাশেভিচকে যে কায়দায় আকাশ থেকে ধরে আনা হয়েছে, তা বর্বোরচিত। এর আগে ইস্তান্বুলের সৌদি দূতাবাসে সৌদি আরবের ভিন্ন মতবাদী সাংবাদিক জামাল খাসোগীকে নির্মমভাবে কেটে হত্যা করা হয়েছিল, যা গোটা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। আলোচিত হচ্ছে এখনো। দূতাবাসের ভেতরে খুন! এর চেয়ে জঘন্য ঘটনা আর কি হতে পারে!
সাংবাদিক নির্যাতনের ভয়াবহতা বিশ্বে মারাত্মকভাবে বাড়ছে। এটা খুবই শংকার বিষয়। মানুষ যে বিষয়টি আনন্দের সঙ্গে ভোগ করছে তাহলো কানেকটিভিটি। গণসংযোগ। এই বিষয়টি আজ থেকে ৩০ বছর আগে এমন করে ভাবা যেত না। মানুষের হাতে হাতে এখন মিডিয়া। মুঠোফোন। ইন্টারনেট। মানুষ সার্চ করে জানতে পারছে- বিশ্বের কোথায় কি ঘটছে।
আমার মনে আছে, স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’ নামের কাগজটি তোলপাড় তুলেছিল শুধু নামেই। কারণ কি? কারণ একটাই— গণমানুষের কণ্ঠস্বর। আমরা যারা সে সময় কিশোর ছিলাম- আমরা অনুমান করতে চাইতাম গণমানুষের কণ্ঠই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধান স্বর।
গণমানুষের স্বপ্নের সংবাদপত্রে মালিক-প্রকাশক- ক্ষমতা, রাজনৈতিক বা বাণিজ্যিক ফায়দা অথবা মতাদর্শ প্রচারের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ থাকেন।
সেখানে স্বাধীন সত্ সম্পাদক দৈনন্দিন যুদ্ধে অনুপ্রেরণা জোগান, দায়িত্ব নেন। সংবাদকর্মীরা সেখানে বিবেক তৃপ্ত করে ভালোবেসে কাজ করেন। নিজেদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব আসার পথ পায় না। ভুলগুলো নিয়মিত স্বীকার এবং পাঠকের কাছে খোলা জবাবদিহি করা হয়। আমরা বাংলাদেশে এমন সংবাদপত্রই চেয়েছিলাম।
চলতি সময়ে আমরা দেখছি অনেক শিল্পপতিরও মিডিয়া মালিক হওয়ার খায়েশ হয়েছে। বিশেষ করে পত্রিকা প্রকাশ করার, পত্রিকার মালিক হবার একটা হিড়িক পড়েছে। এর কারণ কী? কেন এই প্রতিযোগিতা? এ প্রশ্নগুলো আমাকে বেশ ভাবায়। বিদেশে দেখছি, ফ্রি কাগজগুলো সম্পূর্ণই বিজ্ঞাপননির্ভর। তারা পুরোই পরিচালিত হয় পাতায় পাতায় বিজ্ঞাপন ছেপে। হ্যাঁ, এই সময়ে তা একটা ব্যবসাও বটে। এই যে মুনাফা লাভের ব্যবসা, মূলত সেটাই এখন নিয়ন্ত্রণ করছে মিডিয়া জগত। তা দেশে কিংবা বিদেশেই হোক।
সব মিডিয়াই মানুষের কথা বলছে বলে দাবি করে। সেই দাবি কতটা সঠিক? এ বিষয়ে সরকার ও মিডিয়া মালিকদের একটি তুলনামূলক আলোচনা করা যাক। মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ আইন, কোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্যই শুভ নয়। আমরা জানি ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর মতো কাগজে ‘সকল সংবাদই ছাপার যোগ্য’ এমন একটি কথা থাকলেও এই কাগজও সকল খবর ছাপে না।
বিশেষ করে তাদের সমর্থিত গোষ্ঠী, গ্রুপ, এর বিপক্ষের অথবা স্বার্থবিরোধী যদি হয়। তাহলে ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এমন আপ্তবাক্যের মানে কী? মানে কিছুই নেই। আইওয়াশ এখন হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্বেই কিছু কিছু মিডিয়ার মূল ঢাল-তলোয়ার।
পাশ্চাত্যের মিডিয়া যে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত, সেটা আমি বলছি না। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের মনমতো না হলে তারাও আপনার ‘চিঠিপত্র’ ছাপবে না।
এমনটি ভাবার সুযোগ নেই যে, নিউইয়র্ক টাইমসে ইহুদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোনো বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে তারা তা ছাপবে। না, ছাপবে না, যত টাকাই দেয়ার কথা বলা হোক না কেন! তাহলে মিডিয়াকে গণমানুষের বন্ধু বলা যাবে কিভাবে?
কিভাবে নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে মিডিয়া? এ পথটি সহজ করার জন্যই নিরন্তর সংগ্রাম করতে হচ্ছে বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষকে। তারা পিষ্ট হচ্ছেন এক হাত থেকে অন্য হাতে। আমরা খুব ভালো করেই জানি, বর্তমান সময়ে একটি-দুটি মিডিয়ার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করার সুযোগ নেই। কয়েকটি মিডিয়া মিলিয়ে দেখে তবেই সত্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা উচিত।
এর যৌক্তিকতা দিনে দিনে বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রেও গসিপ ম্যাগাজিনগুলোর পাঠক বেশি। তারা এসব সংবাদকে এক ধরনের প্রমোদ বলেই বিবেচনা করে। ‘ইউএস টুডে’ কিংবা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ ভাবনার খোরাক দেয়। সত্য-মিথ্যার হিসাব মেলানোর সুযোগ দেয়। গসিপ ম্যাগাজিনগুলো তো তাও দেয় না। প্রজন্মকে এই সত্য অনুধাবনের কাছাকাছি যেতে হবে।
খুবই আশার কথা যে, এখন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তিন-চার হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন দিয়েও ওয়েব ব্রাউজ করা যায়। জরুরি সংবাদটি এসএমএস করে পাঠানো যায়। আরেকটু দামি ফোন দিয়ে ছবি তুলেও পাঠানো যায় দেশে-বিদেশে। তাহলে সত্যটি দাঁড়াচ্ছে এই, একটি ফোন একজন মানুষকে ‘অন দ্য স্পট’ থেকে রিপোর্টার করে তুলতে পারছে বেশ সহজেই।
যে হিসেবে একজন সচেতন মানুষই হতে পারছেন এক একজন মিডিয়া প্রডিউসার, ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও। এই যে প্রাপ্তি, তার চেতনাকে ধরে রেখেই এগিয়ে যেতে পারে একটি জাতি। বলার অপেক্ষা রাখে না, তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ বলে দাবিদার বাংলাদেশের সরকার পক্ষ থেকে শক্তিশালী সমর্থন জনগণ পাবে, এটা ভাবতেও কষ্ট হয়।
কারণ সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পরপরই তার ঘনিষ্ঠ দলবাজরা স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, মিডিয়া, খেলাধুলা, সড়ক-জনপথ, ব্যবসা-বাণিজ্য, কূটনীতির সেক্টর- সবখানেই দলবাজরা প্রাধান্য পায়। বাংলাদেশে তো বটেই, বিদেশেও এই কাজটি কড়ায় গণ্ডায় রপ্ত করছেন কিছু কর্পোরেট ব্যবসায়ী।
তাদের আয়কর রেয়াত কিংবা রুটি রুজির মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন মিডিয়া ব্যবসাকে। তারা দেখাচ্ছেন, একটি ব্যবসায় লাভ করলেও মিডিয়া ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। অতএব মোটা অংকের ট্যাক্স রেয়াত চাই !
বাংলাদেশে জনসংখ্যা এখন বলা হচ্ছে সতেরো কোটি। সেই দেশে দশ লাখ দৈনিক ছাপা হয় কিংবা চলে- এই বলে বড়াই করে দেশের ‘সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক’টি। সত্যি কী সেলুকাস! তাহলে কোথায় পাঠক? নাকি অনলাইন মিডিয়াই সর্বেসর্বা হয়ে উঠছে? প্রশ্ন আসতে পারে এমনও।
এবার আসা যাক আরেকটি প্রসঙ্গে। আমরা মিডিয়ার বিবর্তন চাইছি। মিডিয়ার নিরপেক্ষতা চাইছি। এই চাওয়ায়, মিডিয়ার সমান্তরালে বিকল্প মিডিয়া বা প্রতিমিডিয়া আমরা কোনগুলোকে বলবো?
ইন্টারনেট ২৪ ঘণ্টার সংবাদমাধ্যম এখন একটি চলিষ্ণু, আলোচিত সংবাদ মাধ্যম। ব্লগ, ফেসবুক, গুগলপ্লাস, টুইটার, ইত্যাদি ইন্টারনেট ভিত্তিক মিডিয়ার প্রসারও আমরা দেখছি খুব দ্রুত। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার যুগে সংবাদপত্রের প্রভাব কমবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
মানুষ মুঠোফোনে, ফেসবুকে সবকিছু তাত্ক্ষণিকভাবে দেখে ফেলছে। জেনে যাচ্ছে। তাই সংবাদপত্রের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে- এমন কথাও বলছেন কোনো কোনো মিডিয়া এক্সপার্ট। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দেখা সংবাদ পরদিন সংবাদপত্রে দেখলে তা তো বাসি, ফ্যাকাশে মনে হবেই। অতীতে যা সংবাদপত্রে তরতাজা খবর ছিল এখন তা ইলেকট্রনিক মিডিয়া চ্যানেল টেলিভিশনে চলে এসেছে।
তারপরও, প্রতিদিন ভোরে একটি দৈনিকের পাতায় চোখ বুলাবার আগ্রহ দেখাচ্ছেন বিশ্বের কোটি কোটি পাঠক। তাই প্রিন্ট মিডিয়া, ছাপা মিডিয়ার পুরোপুরি বিকল্প— তা বলা যাবে না, এমন মন্তব্যও আসছে। তার ওপর, ইন্টারনেটভিত্তিক ব্লগগুলোর মাঝে রয়েছে আরেক ধরনের তস্করবৃত্তি। সেখানে অনেকেই ‘ছদ্মনামে’ ৩০/৪০টি অ্যাকাউন্ট খুলে যাচ্ছেতাই লেখালেখি করে।
ব্লগে যেহেতু অন্যের লেখায় মন্তব্য করা যায়, তাই সংঘবদ্ধভাবে এরা হামলে পড়ে অন্য সৃজনশীল কোনো লেখকের ওপর। এদের অধিকাংশই ক্রিয়েটিভ কোনো মন্তব্য করে না, করতে চায় না। তাছাড়া রাজনৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠার নগ্ন প্রচেষ্টার নামে এরা কেউ কেউ মহান মুক্তিসংগ্রাম, জাতিসত্তা, জাতীয় সংস্কৃতিকেও কটাক্ষ করতে কসুর করে না।
আঘাত করছে বিভিন্ন ধর্মকেও। ফেসবুক, ব্লগ এমন কিছু কথিত ‘বিকল্প মিডিয়া’ তাই হয়ে উঠছে কাদা ছোড়াছুড়ির অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। যা বেদনাদায়ক , লজ্জাজনক। কেউ কারো বিপক্ষে কিছু বললে তাকে ইমেলে ‘ভাইরাস’ পাঠিয়ে আক্রমণও করা হচ্ছে। হ্যাক করা হচ্ছে অ্যাকাউন্ট। প্রতিমিডিয়ার এই মধ্যস্বত্বভোগীরা নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন করে কর্দমাক্ত করছে ভার্চুয়াল জগতকে।
কথায় প্রচলিত আছে, মিডিয়া তিলকে তাল করতে পারে। এই মিডিয়া জগত এখন খলনায়কদের স্বর্গরাজ্য। দেশে-বিদেশে। রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সমাজ, অর্থনীতি সবই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কিছু মিডিয়া মালিক। পাঠক-পাঠিকাকে সত্য খুঁজতে হবে। সত্যের পক্ষে থাকতে হবে। কারণ বিবেচনাবোধই পারে সামাজিক সকল অপশক্তিকে তাড়াতে। রুপার্ট মার্ডকের জন্ম অস্ট্রেলিয়ায়, ১৯৩১ সালে।
মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি মালিক হন পৈত্রিক ছাপাখানা বাণিজ্যের। তারপর আর থেমে থাকেনি তার অগ্রযাত্রা। আকস্মিক বন্ধ হয়ে যাওয়া নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ছিল তার মিডিয়া জগতের মাত্র ক্ষুদ্র একটি অংশ। আধুনিক বিশ্বের সাংবাদিকতার জৌলুস এবং প্রভাব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি সৃষ্টি করেছেন অনন্য রেকর্ড।
ইয়েলো জার্নালিজমের জন্যও তিনি কখনো কখনো নিন্দিত হয়েছেন প্রচণ্ডভাবে। যে ব্যক্তি গণমাধ্যম দিয়ে বিশ্বের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকতাকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে তুলে এনেছেন—তিনি এখন নিজেই শিরোনাম হয়েছেন বিশ্ব মিডিয়ায়। টেলিফোনে আড়িপাতা ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ব্রিটেন ও বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হওয়ায়, তার মালিকানাধীন ‘নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ ১৬৮ বছরের পুরোনো এই পত্রিকা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
মিডিয়া মানুষের কল্যাণের জন্য। মিডিয়ার মাধ্যমে সত্যকেই তুলে ধরতে হয়। কাউকে জিম্মি করা মিডিয়ার কাজ নয়। অন্যদিকে, সাংবাদিক নির্যাতন করাও রাষ্ট্রের কাজ নয়। রাষ্ট্র এবং মিডিয়া উভয়েই যদি, মানুষের কল্যাণ চিন্তার সিঁড়ি হয়- তবে উভয় পক্ষকে কাজ করতে হবে সমন্বয় সাধন করে।
লেখক: ফকির ইলিয়াস, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট, নিউইয়র্ক।