নাটোরের বড়াইগ্রামে নলকুপের গোড়ায় ১০ ফুট মাটি খুড়ে শাহীন শাহ (৪০) নামে এক পরকিয়া প্রেমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার জলন্দা গ্রাম থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।
এঘটনায় পরকিয়া প্রেমিকা সৌদি প্রবাসী আয়ুব আলীর স্ত্রী ও জলন্দা গ্রামের হেলাল হোসেন ফালুর মেয়ে হুসনেয়ারাকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার(১১ জুলাই) বিকেলে উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার জলন্দা গ্রাম থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। মোবাইল ফোন লোকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্যাব ও পুলিশ মাটি খুঁড়ে শাহিন শাহর মরদেহ উদ্ধার করে।
শাহিন শাহ নাটোর সদর উপজেলার দস্তনাবাদ গ্রামের নজির শাহ’র ছেলে এবং নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবি রাজীব হোসেনের সহকারী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানাযায়, স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে ৩ সন্তানের জননী হুসনেয়ারার সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে শাহিন শাহ। গত ৬ মাস ধরে এ সস্পর্ক চলছিলো। কিন্তু গত ৯ আগস্ট রাতের কোন এক সময় প্যান্টের বেল্ট দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয় প্রেমিক শাহিন শাহকে। পরে লাশ বাড়ির নলকুপের পাশে ১০ ফুট গর্ত করে পুঁতে রাখা হয়।
এদিকে শাহিন শাহের কোন খোঁজ না পাওয়ায় নাটোর সদর থানা ও র্যাব-৫ কার্যালয়ে এজাহার দায়ের করে তার পরিবারের লোকজন। পরে মোবাইল ফোন লোকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্যাব এর সদস্যরা হুসনেয়ারার বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে সে। পরে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে র্যাব ও পুলিশ।
শাহিন শাহের চাচাত ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, “গত সোববার কোর্টের কাজ শেষে করে বাড়িতে যায় শাহীন শাহ। এসময় হুসনেয়ারা তাকে ফোনে ডেকে নেয়। সেই দিন রাত থেকেই শাহীনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বুধবার শাহীনের বড় ভাই আক্তার হোসেন বাদি হয়ে নাটোর সদর থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়রী করে। যার নম্বর ২১৮।”
হুসনেয়ারার বড়ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, “একটা মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে শাহিনের সাথে তাদের পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়। তখন থেকেই আমাদের বাড়ীতে যাতায়াত ছিল শাহিনের। কোন সময় বোনের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়েছে বুঝতে পারিনি।” তিনি আর বলেন, “আমার বোনকে সিংড়ায় বিয়ে দিয়েছি। স্বামী আয়ুব আলী সৌদিতে চলে যাওয়ার পর থেকে সে আমাদের বাড়ীতেই থাকে।”
অভিযুক্ত হুসনেয়ারা বলেন, “আমার স্বামী দির্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকেন। এই সুযোগে প্রায়ই আমাকে উত্ত্যোক্ত করে শাহীন। সোমবার সন্ধায় আমার বাড়িতে আসে। আমার মাকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আমার সাথে মেলামেশার চেষ্টা করে। আমি তাকে দুধের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করি। তার প্যান্টের বেল্ট খুলে গলার ফাঁসি দিয়ে শাষরোধে হত্যা করি। পরে নলকূপ মেরামতের জন্য খুড়ে রাখা গর্তে ফেলে মাটি চাপা দেই।”
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক জানান, “হুসনেয়ারাকে আটক করা হয়েছে। একই সাথে ওই হত্যার কাজে সহযোগিতাকারী আরও দুইজনকে ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।”