বাগাতিপাড়া প্রতিবেদক: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মোবাইল ফোন হারানোর পর থানায় অভিযোগের অপরাধে দুই শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আশে পাশে না আসার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল। গত ৯ মার্চ বাগাতিপাড়া মডেল থানায় এ সংক্রান্ত অভিযোগ করেন আইসিটি প্রশিক্ষণার্থী সাবিকুল ইসলাম ও শাফিকুল ইসলামের পিতা রফিকুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী সহদর দুই প্রশিক্ষণার্থী ও অভিযোগসূত্রে জানা যায়, সাবিকুল ইসলাম গত ২ মার্চ আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণ রুমের টেবিলের উপরে তার ব্যবহৃত এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ভুল করে রেখে বের হয়ে যায়। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কিছুদুর যেতেই মোবাইল ফোনের কথা মনে হলে পুনরায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আসার পরও ফোন না পাওয়ায় প্রশিক্ষক আজিজুর রহমানকে অবগত করলে ফোনটি খুঁজে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল অবগত হওয়ার পরও এবং কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও ফোনটি উদ্ধার না হওয়ায় সাবিকুলের পিতা রফিকুল ইসলাম বাগাতিপাড়া মডেল থানায় আইসিটি প্রশিক্ষক আজিজুর রহমানকে অভিযুক্ত করে গত ৯ মার্চ লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
বিষয়টি জানার পর গত ১৫ মার্চ ইউএনও সকলকে ডেকে আইসিটি প্রশিক্ষকের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করায় রফিকুল ইসলাম ও তার দুই ছেলেকে অপমান করেন এবং সাবিকুল ও শাফিকুল যেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রর আসেপাশেও না আসে। এতে রফিকুল ইসলাম হতবাক হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের স্মরণাপন্ন হন। এঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা ১৬ মার্চ জেলা প্রশাসক বরাবর বেআইনী মৌখিক বহিস্কারের প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। সেই আবেদনে দুই ছেলেকে পুনরায় প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করার আবেদন জানান।
অপরদিকে আর এক শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বানীকে ফোন করলে তিনি জানায়, সে মোবাইল ফোনটি পেয়ে আজিজুর স্যারের হাতে দেয় এবং আজিজুর স্যার তাকে বলে ‘যার ফোন সে এসে নিয়ে যাবে’।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আইসিটি প্রশিক্ষক আজিজুর রহমানকে ফোন করলে তিনি একবার বলেন আমি ফোন দেখিনি, আর একবার বলেন আমার টেবিলেই ফোনটি ছিল পরবর্তীতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, আমরা হারানো মোবাইল ফোনটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি একথা জানানোর পরেও প্রতিষ্ঠানের নামে থানায় অভিযোগ করায় ইউএনও স্যার তাদের প্রশিক্ষণে না আসার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি তিনি এও বলেন, থানায় যেহেতু অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেহেতু থানা তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি।
ফোন পেয়ে আপনার হাতে জমা দেয়ার পরও টেবিল থেকে ফোন মিসিং হলে তার দায়িত্ব কার এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজুর রহমান বলেন ‘দায়িত্ব আমারই’।
এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি পেয়ে সিডিআর এর আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল জানান, থানায় অভিযোগের কারণে নয়, তাদেরকে বহিস্কার করা হয়েছে একজন সম্মানিত আইসিটি প্রশিক্ষককে অভিযুক্ত করার কারণে। যা আমাদের এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য হানিকর এবং ফোনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কোথাও না পাওয়া সত্বেও থানায় অভিযোগ জানানোটা ঔদ্ধত্বের শামিল। তারা হয়তো নতুন একটি ফোন কিনে দেওয়ার দাবী করছেন যেটা আদৌ সম্ভব নয় বলেও জানান ইউএনও।