স্টাফ রিপোর্টার: নাটোরে মন্দিরের কমিটি সংক্রান্ত দ্বন্দেন কারণে প্রতিপক্ষ অন্য সদস্যদের ফাঁসাতেই পুরোহিতের ওপর হামলার নাটক সাজানো হয়েছিল বলে আলোচিত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, নাটোর রাজবাড়ির শ্যাম সুন্দর মন্দিরের পুরোহিত অসিত কুমার বাগচী সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকায় ফুল ও প্রসাদ বিতরণ করেন। এরপর তিনি পায়ে হেঁটে গাড়ীখানা মসজিদ পর্যন্ত যান। তারপর রাস্তা পারাপারের সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি সামান্য আহত হন।
পরে কয়েকজনের সহযোগিতায় রিকশাযোগে বাড়ি ফেরেন তিনি। খবর পাওয়ার পরপরই মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ দাস তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এরপর শৈলেন্দ্রনাথ দাস মন্দির কমিটির তার প্রতিপক্ষ সদস্য খোকন কুমার দাস, শ্যামল কুমার কর্মকার, মানিক চন্দ্র রায়, তন্ময়কে ফাঁসাতে আহত পুরোহিতের স্ত্রী ক্ষমা বাগচীর সাথে পরিকল্পনা করেন।
এসময় পুরোহিত, তার স্ত্রী ও মন্দির কমিটির সভাপতি অপপ্রচার করে জানায়, তিনজন দুর্বৃত্ত হেলমেট পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মন্দিরে গিয়ে পুরোহিতের উপর হামলা করেছে। তাতে পুরোহিত কাউকে চিনতে পারেননি। কিন্তু পুলিশ তদন্তে নামলে ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। তদন্তে পুরোহিত, তার স্ত্রী, ২ মেয়ে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
শ্যাম সুন্দর মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ দাস তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি আহত পুরোহিতকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। কিন্তু কোনও ষড়যন্ত্র করিনি।
পুরোহিত অসিত কুমার বাগচী জানান, আমি সহজ সরল মানুষ। শৈলেন্দ্রনাথের ষড়যন্ত্রে পা দেয়া আমাদের ঠিক হয়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নূর আলম জানান, অটোর ধাক্কায় আহত হলে তিনি ১০ টাকা দিয়ে রিকশায় তুলে দেন পুরোহিতকে। পরে শুনতে পান তার উপর হামলা হয়েছে। ঘটনা জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে প্রকৃত ঘটনা জানিয়ে দেন।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নন্দ দাস জানান, পুরোহিতকে নিয়ে মিথ্যাচার করা ও নাটকবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। যাতে এমন জঘন্য ষড়যন্ত্র করার সাহস কেউ না পায়।