নাটোরে গণটিকা প্রদানকে ঘিরে দেখা গেছে নানান অব্যবস্থাপনা। উপচেপড়া ভীড়ে লংঘিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। কিন্তু কোথাও এসব অব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি কোনরকম প্রশাসনিক তৎপরতা। যদিও প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রেই নিয়োজিত ছিল আনছার সদস্যরা।
সারা দেশের মতো উত্তরের জেলা নাটোরের ৫২টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌরসভায় চলছে করোনার গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয় শনিবার। নাটোর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন, গ্রীন একাডেমী, মাদ্রাসাতুল জামহুরিয়াসহ বেশ কয়েকটি গণটিকা কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে টিকা নিতে আসা মানুষের উপচেপড়া ভীড়। সকাল ৯টা থেকে এইসব প্রতিটি কেন্দ্রে মোট ২০০জনকে টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। কিন্তু বেলা ১২টার মধ্যেই নির্ধারিত টিকা শেষ হয়ে যাওয়ায় টিকা না পেয়ে শুরু হয় হট্টগোল। দুই থেকে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকা না পেয়ে হট্টগোল শুরু করেন নারী-পুরুষরা। টিকা শেষ হওয়ার পরও প্রতিটি কেন্দ্রে দেড় থেকে দুই’শ নারী-পুরুষ টিকার জন্য অপেক্ষা করেন। এসময় বিক্ষুদ্ধ লোকজন স্বাস্থ্য কর্মীদের আটকে রাখে।
বিক্ষুদ্ধ নারী পুরুষ বলেন, কতজনকে টিকা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে ওয়ার্ডবাসীদের কোন স্পস্ট ধারনা দেওয়া হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে গেলেই টিকা দেওয়া হবে, এমন ঘোষনার কারনে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর স্বাস্থ্য কর্মীরা বলছে টিকা শেষ। তাহলে কেন দাঁড় করিয়ে রাখা হল। তাছাড়া পরবর্তীতে কোন তারিখে টিকা দেওয়া হবে তারও কোন নির্দেশণা দেয়া হয়নি।
নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরি জানান, টিকা প্রয়োগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল স্থানীয় কাউন্সিলরা। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের কয়েকটি ওয়ার্ড বাদে কোথাও কোন সমস্যা হয়নি। পরবর্তীতে এই ধরনের হট্টগোল যাতে না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, কোথাও মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। সরেজমিনে পৌরসভার টিকা কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন টিকা কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে দেখা গেছে নারী-পুরুষদের। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারনে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণের কারনে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা প্রয়োগ করা যায়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।