নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের নলডাঙ্গার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগ নেতা এবং সাবেক এমপি, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বার্ধক্যজনিত নানারোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন(ইন্না লিল্লাহী ওয়া…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। রবিবার বিকাল তিনটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রীসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
প্রবীণ আ.লীগ নেতা এডভোকেট সাইফুল ইসলাম বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ।১৯৬০ সালে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী কলেজ ছাত্রসংসদের ভিপি নির্বাচিত হোন । ১৯৬৫ সালে ছিলেন বৃহত্তর রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি । ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যূত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ছয় দফা আন্দোলনের সময়েও তিনি ছিলেন রাজনীতির মাঠে। ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জনমত সংগঠনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরোটাই যুদ্ধের মাঠে কাটিয়েছেন।
১৯৭৩ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে স্বাধীন বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত সংসদের কনিষ্ঠতম এমপি নির্বাচিত হন। জাতীয় চারনেতার একনেতা এইচ, এম কামরুজ্জামান হেনার দক্ষিণহস্ত হিসেবে পরিচিত সাইফুল ইসলাম ছিলেন বঙ্গবন্ধু ঘনিষ্ট সহোচর।।১৯৭৫ সালের কালরাতের পরবর্তী সময়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার শাসনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। নাটোরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যাঁরা নিবেদিতপ্রাণ বলে পরিচিত তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম অন্যতম প্রধান। সকল প্রতিকূলতাঁর মধ্যেও আওয়ামীলীগের রাজনীতি ছাড়েন নি তিনি। তাঁর চেষ্টায় গড়ে উঠেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নাটোরের পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে যাদের সুনাম রয়েছে, তিনি তাদের অন্যতম একজন।গত ২৩ জানুয়ারী স্ট্রোক জনিত কারণে তিনি শেরেবাংলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর একটু সুস্থ হলে তাঁকে নাটোরে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডক্যিাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
সাইফুল ইসলামের মৃতুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নাটোর জেলার সকল সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বৃন্দ।