নাটোরের বড়াইগ্রামে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের তালিকাভুক্ত বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে নির্মিত হচ্ছে প্রকৌশলীর বর্ধিত অফিস। উপজেলা চত্বরে অনুমোদিত ডিজাইন ছাড়াই চাঁদার টাকা ও উপকরণে একতলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান। রাজমিস্ত্রীর পাশাপাশি বিল্ডিং এর কাজে নিয়োজিত আছে উপজেলার মাঝগাঁও সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের এলসিএস(লেবার কন্ট্রাক্টিং সোসাইটি) এর ৩০ জন নারী শ্রমিক।
জানা যায়, প্রকৌশলী অফিসের ল্যাবরেটরী ভবন নির্মাণের কথা বলে পরিষদ মিলনায়তন সংলগ্ন পতিত জায়গায় ৪ কক্ষ বিশিষ্ট এক তলা ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, ইট, বালু, সিমেন্ট, রড বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে চেয়ে নিচ্ছে। দিতে অস্বীকৃতি জানালে টেন্ডারে পাওয়া চলমান কাজের ভুল-ত্রুটি প্রকৌশলী রবিউল আলম খুঁটে খুঁটে দেখতে চায়। এছাড়া ভবিষ্যতে কাজ নিয়ে আরও জটিলতা তৈরি হবে এমন কথা চিন্তা করে বাধ্য হতে হচ্ছে প্রকৌশলীর চাহিদা মোতাবেক নির্মাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা এটাকে জুলুম, অশুদ্ধাচার, ঘুষ ও দুর্নীতির সামিল বলে মনে করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলসিএস এর একাধিক নারী শ্রমিক জানান, মাসে ৬ হাজার টাকা মজুরির ভিত্তিতে আমরা নিজ এলাকায় পাকা ও কাঁচা সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করি। কিন্তু এতদূর এনে অমানবিকভাবে আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। দুপুরে কোন খাবার বা যাতায়াত খরচও দেয় না প্রকৌশলী অফিস। এই কাজ না করলে আমাদেরকে ছাটাই করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের সুপারভাইজার।
পৌরসভা এলাকার মধ্যে কোন ভবন নির্মাণের জন্য ডিজাইন সহ প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিতে হয়। সেখানে স্বয়ং প্রকৌশলী অফিস অনুমোদন ছাড়া এভাবে একতলা ভবন কি করে নির্মাণ করছে, এছাড়া এভাবে ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্মাণ সামগ্রী আদায় বা গ্রহণ করাটা ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা দুর্নীতি বা অশুদ্ধাচার হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে প্রকৌশলী রবিউল আলম বলেন, “এটা দুর্নীতি নয়, তবে অশুদ্ধাচার বলতে পারেন।”
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহানউদ্দিন মিঠু জানান, “বিষয়টি সম্পর্কে খুব একটা জানা নাই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”