জাল দলিল করে প্রায় সাড়ে ১০ বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার বড়াইগ্রাম উত্তরপাড়া মহল্লায়।
বৃহস্পতিবার(২১ জুলাই) বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।
জানা যায়, গত ২০ জুন বড়াইগ্রাম সাবরেজিস্ট্রার অফিসে বড়াইগ্রাম পৌরসভার বড়াইগ্রাম উত্তরপাড়া মহল্লার ইয়াসিন আলী মোল্লার ৩ দশমিক ৪৮ একর জমি জনৈক ব্যক্তিকে নকল ইয়াসিন মোল্লা সাজিয়ে তার ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। দীর্ঘ একমাস পর বুধবার(২০জুলাই) জমির প্রকৃত মালিক ইয়াছিন মোল্লা বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তিনি বড়াইগ্রাম সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিলের নকল কপি সংগ্রহ করে দেখেন তার সম্পত্তি অন্য কাউকে বাবা সাজিয়ে ছেলে ইয়াকুব মোল্লা, আবুল কালাম, একরামুল ইসলাম, মেয়ে ইসমা খাতুন, সাবিনা খাতুন ও সাবানা খাতুন এবং স্ত্রী মালেকা বেগমের নামে গোপনে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে বড়াইগ্রাম সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সাবরেজিস্ট্রার কানিজ ফাতেমা বলেন, ইয়াসিন মোল্লা আমার কাছে এসে দাবি করেছেন যে তিনি কোনো জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি। তবে আমি দলিলে দেওয়া ছবি ও দাতার চেহারা মিল পেয়েই স্বাক্ষর করেছি। তিনি জমি ফিরে চাইলে আদালতে মামলা করতে পারেন।
ভুক্তভোগী ইয়াসিন আলী মোল্লা বলেন, ছেলেরা আমার দেখাশুনা করে না, উল্টো মারধরের হুমকি দেয়। এর আগেও জীবনের ভয়ে আমি কিছুদিন বাড়ি ছাড়া ছিলাম। তারপরও আমি একটি পুকুরসহ অধিকাংশ জমি ছেলেদেরকেই চাষাবাদ করে খাওয়ার জন্য দিয়েছি। তবুও এবার তারা আমার প্রায় সব জমি জাল দলিল করে নিয়েছে। আমার ঘরে থাকা দলিল চুরি করে অন্য কাউকে বাবা সাজিয়ে তারা এ প্রতারণা করেছে। আমি বড়াইগ্রাম সাবরেজিস্ট্রার অফিসে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। আমি এ ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ভুক্তভোগীর ছেলে অভিযুক্ত একরামুল ইসলাম ও কামাল বলেন, জমি আমার বাবাই রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবেন, সেজন্য তিনি আমাদের কাছে টাকা চেয়েছেন। আমরা এ বছর টাকা দিতে পারব না বলেছি। আর তাতেই ক্ষোভ থেকে তিনি এ অভিযোগ করেছেন।
এদিকে জমির দলিল লেখক আনিসুল ইসলাম আনিস বলেন, দলিল সম্পাদন করেছি আমি কিন্তু সাবমিট করেছেন সমিতির সভাপতি। এ বিষয়ে তিনিই বলতে পাড়বেন। তবে তিনি হজ্বে গেছেন, দেশে ফিরে এলে এ ব্যাপারে জানা যাবে।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।