নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর কলা হাটের কাছে নন্দকুজা নদীর প্রায় পাঁচ শতাংশ পাড় দখলে নিয়ে পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা বেলাল হোসেন ও ব্যবসায়ী জহির। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও নির্মাণকাজ বন্ধ হয়নি। এমনকি দখলকৃত সরকারের নদী সিকস্তী জমিটি উচ্ছেদের জন্য কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছেনা।
জানা যায়, অগ্রণী ব্যাংক নাজিরপুর শাখায় সিনিয়র অফিসার পদে চাকরি করেন বেলাল হোসেন। তিনি নাজিরপুর ইউনিয়নের দুধগাড়ি গ্রামের সাবদুলের ছেলে এবং ব্যবসায়ী জহির রায়হান বাজার এলাকার বাসিন্দা। নদীরক্ষা আইনে উল্লেখ রয়েছে নদীর সীমানার ৩০ ফিট জায়গা নদীর অন্তর্ভুক্ত। উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার নদীর জায়গার সীমানা নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না ওই প্রভাবশালীরা। অবৈধভাবে ওই পাকা ঘর নির্মানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানালেও থেমে নেই নির্মান কাজ।
নাজিরপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা গোপাল কুমার সিংহ বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই মাপজোক মানছেন না ওই প্রভাবশালীরা। উপরন্তু সরকারী নির্দেশ অমান্য করে আরসিসি দিয়ে স্থায়ী পাকা ভবন নির্মাণ করছেন।
স্থানীয়রা জানান, নন্দকুজা নদীর পাড় ঘেঁষে স্থানীয় মমতাজ বেগম ও তার পাঁচ বোনের কাছ থেকে ৮.২৫ শতাংশের একটি জমি স্ত্রীর নামে কিনে নেন জহির। নাজিরপুর মৌজার হাল ১৭৬ নম্বর দাগের ওই জমিটি কেনা হলেও দক্ষিণের ৫ শতাংশ নদীপাড়। তা দখলে নিয়ে পাকা ঘর নির্মাণ চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ব্যাংক কর্মকর্তা বেলাল ও জহির ব্যবসায়িক অংশীদার। নিজে ব্যাংক কর্মকর্তা হওয়ায় কৌশলে জমিটি ব্যবসায়িক অংশীদার জহিরের স্ত্রী রুমা বেগমের নামে কিনেছেন বেলাল। ওই জমিটি নদীসংলগ্ন হওয়ায় উত্তর দিকে পতিত রেখে দক্ষিণ দিকে নদীর পাড় দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন তারা।
অভিযুক্ত জহির বলেন, নদীর তীর ঘেঁষে তার স্ত্রীর নামে ৮.২৫ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে। তবে জমিটি স্ত্রীর নামে কেনা হলেও নদীর পাড় সংলগ্ন জমিতে ঘর নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছেন বেলাল। ব্যাংক কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনেই ঘর নির্মাণ করছেন বলে জানান তিনি।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু জানান, ব্যাংক কর্মকর্তা বেলাল ও ব্যবসায়ী জহির নদীর পাড় দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। পরিষদের পক্ষ থেকে স্থাপনা নির্মাণে বাধা নিষেধ করলেও বেলাল ও জহির তা মানেনি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল বলেন, বাড়িটি উচ্ছেদের জন্য ডিসি অফিসে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। ডিসি অফিস নির্দেশ দিলে উচ্ছেদ করে দেব।