
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি শনিবার (২২ মে) রাতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পিতম্বরবশী গ্রামে ঘটেছে। নিহত ব্যক্তি পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে শিপন (৩৫)। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহতের স্বজনরা দাবি করেন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে তাকে হত্যা করেছে। এদিকে খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে শিপনের লাশ উদ্ধার করেন এবং রোববার সকালে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান। এছাড়াও এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।নিহতের বাবা আলতাফ হোসেন জানায়, আধিপত্য বিস্তারে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমনের নেতৃত্বে মৃত আকবরের ছেলে কবির, কালাইয়ের ছেলে মিজান, বাবলু মাস্টার, আইন উদ্দিনের ছেলে ময়েন, মৃত আমিরুলের ছেলে মদন,মৃত আবুল হোসেনের ছেলে হাছেন,মৃত অছিম উদ্দিনের ছেলে পলাশসহ আরও অনেকে শনিবার রাত আনুমানিক ১১ টায় শিপনকে গোদের বাজার এলাকা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে কবিরের বাড়ির সামনে রাস্তায় পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকের উপর কোপ মারে। এতেই শিপন মারা যায়।
আলতাফ হোসেন আরো বলেন, রাতেই মোবাইলে খবর পাই শিপনকে কুপিয়ে কবিরের সামনে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে শিপনকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা দিই। পথেই শিপনের দেহ নিথর হলে বাড়ি ফিরে আসি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত কবিরে স্ত্রী রহিমা খাতুন জানায়, দীর্ঘ ধরে মসজিদের জমি নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে শনিবার রাত ১২ টার দিকে জাফর গ্রুপের এনামুল, এরাশাদ সহ অনেকে ছুরি (চাকু) ইট, লাঠি নিয়ে আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এসময় চাকুর আঘাতে শিপনের মৃত্যু হয়।এলাকাবাসী জানায়, আধিপত্য বিস্তারে দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর গ্রুপের সাথে পান্টি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন গ্রুপের এলাকায় বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জেরেই শনিবার রাতে জাফর গ্রুপের শিপন খুন হন।এবিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর বলেন, প্রতিপক্ষের নেতা শনিবার বিকেলে গোদের বাজারে তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং করেন। আর রাতে আমার সমর্থিত শিপনকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এবিষয়ে জানতে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। পরে সুমনের বড় ভাই মামুন মুঠোফোনে বলেন, আমার ছোট ভাই একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয়। সেকারনে যেকোন ঘটনায় সমুনের দোষ হয়। তবে এঘটনায় সমুনের কোন হাত নেই। তিনি আরো বলেন, যা ঘটেছি তা অত্যন্ত দুঃখজন ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়।কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র এলাকায় জাফর ও সুমন গ্রুপের বিরোধ চলছিল। বিরোধের জেরে শনিবার রাতেও দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাকে শিপনের মৃত্যু হয়। তিনি আরো বলেন, লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।