নাটোরে ট্রাক ও ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ কর্মী নাজমুল শেখ বাপ্পীকে কুপিয়েছে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষরা। এতে তাঁর হাত–পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়েছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের জয় বাংলার মোড়ে রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে বাপ্পীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় তার প্রতিপক্ষ।
গুরুতর অবস্থায় বাপ্পীকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তির পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, নাটোর সাব–রেজিস্ট্রি অফিসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাপ্পীর ওপর হামলা চালায়িছে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের অনুসারীরা।
বাপ্পী নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারী বলে পরিচিত। বাপ্পীর সমর্থকদের অভিযোগ, হামলা চালিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের অনুসারীরা।
ঘটনার পর থেকে শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে, ঘটনার পর এমপি শিমুলের অনুসারীরা নাটোর শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শহরে শোডাউন দেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার আগে থেকেই সাব–রেজিস্ট্রি অফিসে অবস্থান করছিলেন নাজমুল শেখ বাপ্পী। সন্ধ্যার পর রেজিস্ট্রি অফিস থেকে বের হওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে ধরে ৫–৬ জন যুবক। এরপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বাপ্পীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন তাঁরা। বাপ্পীর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পালিয়ে যান হামলাকারীরা। স্থানীয়রা তাঁকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
রাত ৯টার দিকে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন এমপি শিমুলের অনুসারীরা। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির নেতা রাশেদুল ইসলাম কোয়েল ও গোলাম কিবরিয়া সেলিম। তবে রমজানের কার্যালয়ে কাউকে না পেয়ে তাঁরা চলে যান। এ সময় দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কায় ব্যস্ততম পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়।
নাজমুল শেখ বাপ্পীর ভাই জেলা ছাত্রলীগের সহ–সভাপতি গোলাম রাব্বানী অভিযোগ করেন, তাঁর ভাই এমপি শিমুলের সঙ্গে রাজনীতি করেন। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের লোকের ভাইয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, ‘বাপ্পী একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দীর্ঘদিন জেলও খেটেছে। সাব–রেজিস্ট্রি অফিসে চাঁদা তোলা নিয়ে স্থানীয় জুনিয়র ছেলেদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত নয়।’
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ জানান, হামলাকারীদের খুঁজতে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ইনচার্জ (ডিআইও–১) কাজী জালাল উদ্দীন আহমেদ জানান, শহরে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।