প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যেকোনো দেশের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এখন আমাদেরকে আর কেউই পেছনে টেনে নিতে পারবে না।’ ইতালি সফরের প্রথম দিন মঙ্গলবার রাতে রোমের পার্কে দ্যা প্রিনসিপি গ্রান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পা’তে আওয়ামী লীগের ইতালি শাখা আয়েজিত এক সংবর্ধনায় প্রদত্ত ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের শতকরা ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছি। এখন আর দাতারা আমাদের ভিক্ষা দিতে আসে না। বরং তারা আমাদেরকে তাদের উন্নয়ন সহযোগী অভিহিত করে সহযোগিতা দিতে আসে। কারণ কারো কাছে আমরা ভিক্ষা চাই না।’ নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের পদ্মাসেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো কাজ যে আমরাই পারি তা আমরা প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছি।’ পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংক সরকারকে বদনাম দিতে চেয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করি যে, আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই এই সেতু নির্মাণ করবো এবং এখন আমরা নিজস্ব অর্থেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে কাজেই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যখনই আমরা ক্ষমতায় আসি না কেন আমরা দেশটাকে এমন ভাবে গড়ে তুলবো যাতে করে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আমরা এখন দাবি করতেই পারি বিশ্বে আমরা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সেই পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।’ অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। আমাদের সরকার সেখান থেকে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে এবং ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমাদেরকে এই অবস্থান ধরে রাখতে হবে তাহলেই আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে পারবো। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে তিনটি মাপকাঠি রয়েছে তা আমরা ইতোমধ্যেই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘৭৫-এর জাতির পিতাকে হত্যার পর যারাই সক্ষমতায় এসেছিল তারা নিজেদের ভাগ্য বদলে ব্যস্ত ছিল, জনগণের জন্য কিছু করে নাই। সে সময় বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচিতি ছিল সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস এবং দুর্ভিক্ষের দেশ হিসেবে এবং বিশ্বে বাংলাদেশকে অবহেলার চোখে দেখতো, যা আমাদের জন্য লজ্জার এবং বেদনাদায়ক ছিল ।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার অতি দারিদ্রের হার শতকরা ১০ শতাংশে এবং দারিদ্রের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ইনশাল্লাহ আমরা এ বছরের মধ্যে এই হারকে আরো ২ থেকে ৩ ভাগ নামিয়ে আনতে সক্ষম হব,যেজন্য আমরা বেশকিছু বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই দেশে আর কেউ দরিদ্র থাকবে না এবং কেউ আমাদের সহানুভূতির চোখে দেখবে না। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
Type a message…