নাটোরে যুবলীগ নেতা মো. মিঠুন আলীর ডান হাতের কব্জি কাটা মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। একই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল এবং সেন্টুকে জামিন দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে নাটোর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রওশন আলম এ আদেশ দেন।
আহত মিঠুন আলী (৩৫) শহরের ভবানীগঞ্জ এলাকার মৃত শাহাবুদ্দিন আলীর ছেলে এবং পৌর ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম রমজান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল এবং সেন্টুর সদর আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁদের পক্ষে জামিনে চেয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহজাহান কবীর শুনানি করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ–সমর্থিত বিপুলসংখ্যক আইনজীবীও তাঁর সঙ্গে দাঁড়ান।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালত পুলিশের পরিদর্শক নাসরিন আক্তার জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে মোর্তুজা আলীর জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রওশন আলম। অন্য আসামিদের পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনের পর শরিফুল ইসলাম রমজান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাটোর সদরে আইন শৃঙ্খলা অবনতির জন্য সদর থানার ওসিকে দায়ী করে তার প্রত্যাহার দাবি করেন।
এর আগে, গত সোমবার (২৪ জুলাই) দিনগত রাত ১২টার দিকে আহত মিঠুন আলীর ছোট ভাই স্বপ্ন বাদশা বাদী হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম রমজানসহ ৩০জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ জনের নামে নাটোর সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামীগ নেতা নান্নু শেখ এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলীর সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধে গত ১৬ এপ্রিল যুবলীগ নেতা মিঠুনসহ তার সমর্থকরা সাবেক কাউন্সিলর নান্নু শেখকে কুপিয়ে জখম করে। এরপর থেকেই এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিঠুনসহ তার সমর্থকরা বলারীপাড়া এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় রাজার পুকুর পাড়ে মুখোশ পড়া অবস্থা ২০-২৫ জন যুবক মিঠুনের ওপর হামলা করে। এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার হাতের কব্জি কেটে দেয়। এ সময় মিঠুনকে বাঁচাতে গেলে মিঠুন সমর্থক আরমান আলী, আব্দুলাহ আল রাব্বি ও বকুল মিয়াসহ ৪জন আহত হয়। এসময় মিঠুন আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার লালমাটিয়ায় সিটি হাসপাতালের নেওয়া হয়।