প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস লিখে প্রেমিকার দেয়া ওড়না গলায় পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে কলেজ ছাত্র ফাহিম ফয়সাল (১৯)।
ফাহিম নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের পারকোল গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে এবং চাপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক্যাল কলেজের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র।
রোববার (১৬ জুলাই) রাতে ছাত্রাবাস থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রেমঘটিত কারণে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে ফাহিম আত্মহত্যা করেন। পরে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে জানান। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আত্মহত্যার আগে ফাহিম তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক ওয়ালে লিখেন,
“মিত্তিকা তুমি আমার বিশ্বাসটা একদম শেষ করে দিয়েছো, আর বিশ্বাস ছাড়া বেঁচে থাকাটা সম্ভব না। তোমার মনে আছে তুমি আমাকে তোমার ব্যবহার করা একটা ওড়না দিয়েছিলে, আমি সেই ওড়নাতেই আজ ফাঁসি নিচ্ছি।”
এমন আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ওই ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করে ছাত্র ফাহিম ফয়সাল।
চাপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক্যাল কলেজসংলগ্ন একটি মেসে রবিবার দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে আত্নহত্যা করে সে। তার মৃতদেহ সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে স্বজনরা।
জানা যায়, ফাহিম ও মৃত্তিকা উপজেলার আগ্রাণ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতো এবং সেখান থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এসএসসি পাশ করার পর ফাহিম চাপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক্যাল কলেজে এবং মিত্তিকা মৌখাড়া কলেজে ভর্তি হয়। এর কিছুদিন পর মৃত্তিকা এই প্রেমের সম্পর্ক থেকে সরে আসলে ফাহিম মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং অবশেষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্নহত্যা করে। ফাহিম ওই স্ট্যাটাসে তার মা’কে উদ্দেশ্য করে লিখেন, আম্মু পারলে আমাকে মাফ করে দিও। তোমার ছেলেটা এভাবে চলে যেতে চায়নি কখনও। ইচ্ছে ছিলো বড় কিছু হয়ে তোমার ইচ্ছে পূরণ করার। তোমার অনেক সম্মান নষ্ট করেছি…। সময় মতো ঔষধগুলো খেও। আমি জানি এটা মহাপাপ। তাও আমি এটা করতে বাধ্য হচ্ছি।”
মাঝগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আজাদ দুলাল এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এটা আবেগজড়িত একটি দুর্ঘটনা যা কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না। প্রতিটি পিতা-মাতাকে এ সব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।