নিজস্ব প্রতিবেদক : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজার এলাকায় মিরাক্কেলখ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা আবু হেনা রনি’র উপস্থিতিতে তার দুই বন্ধুকে মারপিট করে গুরুতর জখম করার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার কিছু পরে উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারে অবস্থিত একটি সিনেমা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুদাসপুর পৌরসভার গারিষাপাড়া মহল্লার চাতাল ব্যবসায়ী ছাবলু মোল্লাসহ আরো ৪ জনের নামে রনি’র বন্ধু তহুরুল বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। রনি’র সাথে থাকা আহত দুই বন্ধু তহুরুল ইসলাম (৩৬) ও রাজু আহম্মেদ (৩৫) এর বাড়ি পার্শ্ববর্তী সিংড়া উপজেলার বিলদহর গ্রামে।
বিস্তারিত জানতে অভিনেতা আবু হেনা রনি’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে রনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আবু হেনা রনি তার বন্ধু রাজু আহম্মেদের প্রাইভেটকারে চেপে আরও তিনজন বন্ধুসহ সিনেমা দেখার জন্য চাঁচকৈড় বাজারে যান। তার বন্ধু রাজু আহম্মেদের প্রাইভেটকারটি রাস্তার পাশে পার্কিং করে সবাই মিলে পাশেই দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এসময় অপর দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে একটি প্রাইভেটকার এসে অপ্রয়োজনীয় হাইড্রোলিক হর্ন বাজায় এবং এমনভাবে এগিয়ে আসে যেন তাদের গায়ের ওপর উঠে যাবে। এরপর গাড়ি থামিয়ে গাড়ির চালকের আসনে বসে থাকা স্থানীয় চাতাল ব্যবসায়ী ছাবলু মোল্লা গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আবু হেনা রনি’র বন্ধুরা ছাবলু মোল্লাকে গালাগালি করতে নিষেধ করায় ছাবলু মোল্লা গাড়ি থেকে নেমে তাদের উপর চড়াও হয়। পরে রনিসহ স্থানীয়রা তাকে বাধা দিলে ছাবলু মোল্লা উত্তেজিত হয়ে মোবাইল ফোনে তার কিছু স্বজনদের ফোন দিয়ে ডাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল এসে তার বন্ধুদের মারধর শুরু করলে তহুরুল ইসলাম ও রাজু আহম্মেদকে গুরুতর জখম করে এবং প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে। আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গুরুদাসপুর থানায় আসেন এবং তার বন্ধু তহুরুল বাদী হয়ে ছাবলু মোল্লাসহ আরও ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় আবু হেনা রনি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্ত স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি আশা করেন, এই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মধ্যে দিয়ে এটাই প্রমাণ হবে যে নিজ এলাকার দাপটে ইচ্ছা হলেই কারও গায়ে হাত তোলা যায় না।
মামলায় অভিযুক্ত ছাবলু মোল্লাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, তিনি তার ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে প্রাইভেটকার যোগে চাঁচকৈড় হাটের ব্রীজের ওপর থেকে বাজারের দিকে ধীরে ধীরে নামছিলেন। সিনেমা হলের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিগারেট খাচ্ছিলো ৪-৫ জন। বার বার হর্ন দিলেও তারা রাস্তা থেকে সরে না দাঁড়াননি। এ কারণে হর্ন বেশি দেওয়ায় আবু হেনা রনি’র বন্ধুদের মধ্যে একজন এসে তাকে কলার চেপে ধরে গাড়ি থেকে নামায়। রনি’র বন্ধুরা বেশি উত্তেজিত হওয়ার কারণে আত্মরক্ষার্থে তিনি তার কিছু স্বজনদের ফোন করে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। এরপর কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মারপিট শুরু হয়। তবে আবু হেনা রনিকে মারপিট করা হয়নি, শুধু তহুরুল ও রাজুকে তারা মেরেছে বলে জানান ছাবলু।
ছাবলু মোল্লা আরও বলেন, তার ১২ বছর বয়সী ছেলেকে তারা লাত্থি মারার কারণে তার ছেলে রাজুর গাড়ির সামের কাঁচ ভেঙ্গে দেয়।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের ধরতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।