সৈয়দ মাসুম রেজা, নাটোর :
নাটোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সান্তাহার থেকে আগত নাটকের দল ’চৌপাশ নাট্যাঞ্চল’ মঞ্চস্থ করেছে ‘গীতাঞ্জলি ১৫৭’। নাটোরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এই মঞ্চায়ন বেশ সাড়া ফেলেছে। অনেকেই নাটকটি দেখার সুযোগ করতে না পেরে আফসোস করেছেন। যারা দেখেছেন তাদের অনেকেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলে ঘরে ফিরেছেন।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নাটক “গীতাঞ্জলি ১৫৭” এর ৪র্থ মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়েছে নাটোরে। বগুড়া জেলার সান্তাহারের নাট্যদল “চৌপাশ নাট্যাঞ্চল” এর ২৫ তম প্রযোজনা এটি। শুক্রবার (১৯ মে, ২০২৩) সন্ধ্যায় নাটোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি হলরুমে দর্শনীর বিনিময়ে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।
‘গীতাঞ্জলি ১৫৭’ নাটকটির নাট্যকার, নির্দেশক এবং চৌপাশ নাট্যাঞ্চলের সভাপতি রাজা ফকির গল্পটি সম্পর্কে বলেন, একজন লাইব্রেরিয়ান দিনের পর দিন বছরের পর বছর সংগ্রহ করে চলেছে অদ্ভুত সব বই। অন্ধকার গ্রন্থাগারেই তার কেটে যায় মাসের পর মাস। ফস্টাসের মত জ্ঞান পিপাসায় আসক্ত হয়ে তার হৃদয় বিক্ষিপ্ত হতে থাকে। প্রশান্তির জন্য আশ্রয় খোঁজে বইয়ের পাতায়। ঠিক তখনই সে নতুন করে আবিষ্কার করে গীতাঞ্জলি। এক নিবিড় আত্মতুষ্টি উপলব্ধি হয় তার। গীতাঞ্জলি হয়ে ওঠে তার কাছে এক মহান গ্রন্থ। একে আরো মহিয়ান করে রাখবার জন্য সে বের করে এক ভয়ংকর পথ। মনুষ্য রক্তে প্রতিটা কবিতার অক্ষর অনুলিখন করতে শুরু করে সকলের আড়ালে বছরের পর বছর। ১৫৬ টি গান লিখতে সে হত্যা করে ১৫৬ জন মানুষ। এবার শেষ গান ১৫৭ নম্বর লিখতে গিয়েই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। কেননা সাহিত্য আর নারী এই দুইয়ের মাঝে তো আর খুব বেশি দূরত্ব থাকে না।
নাটকটি দেখার পর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদকপ্রাপ্ত, নাটোরের এক সময়ের মঞ্চ কাঁপানো অভিনেতা মুজিবুল হক লালা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আগেকার দিনে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে নাটক করতে হতো। কিন্তু এখন প্রযুক্তির সাহায্যে নানা রকম নিরীক্ষণমূলক নাটক তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই ধরনের ব্যতিক্রমী নাটক করার জন্য আমাদেরকে আরও বেশি মঞ্চে নাটক দেখতে হবে। তবেই আমরা আরও সমৃদ্ধ হব।
৪০ মিনিট দীর্ঘ এই নাটকটিতে লেখকের চরিত্রে অভিনয় করেন এটিডি এঞ্জেল, লাইব্রেরিয়ান চরিত্রে রাজা ফকির এবং আগন্তুক চরিত্রে জাবেদ জিতু। এছাড়াও নাটকটির সহনির্দেশক ও কোরিওগ্রাফিতে কাজ করেছেন এটিডি এঞ্জেল, আলোক প্রক্ষেপনে ঈশ্বর চন্দ্র, শব্দ পরিচালনায় নাসিম আহমেদ, সেট নির্মাণে স্বপন, শামীম, মিলনায়তন ব্যবস্থাপনায় মোস্তাজিউর সুমন, শিহাব, গুলজার, নাফিস, মেহেদী এবং সার্বিক প্রোডাকশন ব্যবস্থাপনায় ছিলেন জাবেদ জিতু।