ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ধর্ষক মজনু মুঠোফোন বিক্রয়ের বকেয়া একশ টাকা নিতে এসে ধরা পড়ে র্যাবের হাতে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা গ্রামে। এর আগে ধর্ষক মজনু ঘটনার পরে মুঠোফোনটি তার পূর্ব পরিচিত ভ্রাম্যমান পতিতা অরুণার কাছে ৫০০ টাকায় বিক্রি করে। ফোনটি বন্ধ থাকায় অরুণা খায়রুল হক নামের এক ব্যক্তিকে ঠিক করতে দেন। কিন্তু অরুনা মজনুকে ৪০০ টাকা দিয়ে বাকি একশ টাকা পরে দেওয়ার কথা বলেন। প্রথমে খায়রুল ও পরবর্তিতে অরুণাকে আটক করা হলে তাদের কাছ থেকে মজনুর শারীরিক গঠনসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পায় ব্যাব।
বুধবার কাওরান বাজারের নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের র্যাব জানায়, নির্যাতনের শিকার ঢাবি শিক্ষার্থী তার বান্ধবীর বাসা শেওড়ায় যাওয়ার পথে বাস থেকে ভুলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে নেমে পড়েন। সে ভুল জায়গায় নেমে পড়ার কারনে শেওড়ার দিকে হাটতে হাটতে এগিয়ে যান। ধর্ষক মজনু ঢাবি শিক্ষার্থ ীকে স্কুলের ছোট মেয়ে ভেবে তার পিছু নেয়। মজনুর পিছু নেওয়ার বিষয় তিনি খেয়াল না করে হেটে যেতে থাকেন। এমন সময় হঠাৎ পিছন থেকে ঢাবি শিক্ষার্থ ীকে চেপে ধরে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যায় । এই ঘটনায় পর প্রথম দিকে মেয়েটি অনেক ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।
এসময় নির্যাতনের শিকার ঢাবি শিক্ষার্থীর জ্ঞান ফেরার পর তাকে একাধিক বার গলাটিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে এবং ভয় ভিতি দেখাতে থাকে বলেও জানান র্যাব। প্রায় তিন ঘন্টা নির্যাতন করার পরে ঢাবি শিক্ষার্থীর কাছে থাকা
মুঠোফোন ও অন্যান্য জিসিনপত্র নিয়ে চলে যান ধর্ষক । পরবর্তিঅতে অসুস্থ হয়ে পরে নির্যাতনের শিকার মেয়টি। সে ঐ নির্জন জায়গা থেকে বের হয়ে কোন কিছু বুঝতে না পেরে পায়ে হেটেই মহাসড়ক পার হতে যান কিস্তু রাস্তার মাঝখানে উচু দেওয়াল থাকায় রাস্তা পার হতে ব্যর্থ হয়ে আবার ঘুরে আসেন। এ সময় অল্পের জন্য গাড়ি চাপা থেকে রক্ষা পান তিনি । পরবর্তিতে পায়ে হেটে শেওড়ার দিকে রওনা দেন। শেওড়া পৌছে সে ওভার ব্রিজটি পার হয়ে একটি রিক্সা নিয়ে তার বান্ধবীর বাসায় যান এবং সব কিছু বললে তারা তাকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
র্যাব আরো জানায়, ঘটনার পরে মোবাইফোন বিক্রি করে নরসিংদী চলে যায় এবং মঙ্গলবার সকালে একশ টাকার জন্য ঢাকায় ফেরত আসেন। এই ঘটনা ছিল একেবারেই ক্ল লেস তবে আমরা জানতে পারি তার সামনের দুটি দাত নাই এই সূত্র ধরেই তাকে আমরা খুজতে থাকি এবং বুধবার ভোরে শেওড়া রেলক্রসিং এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটক হওয়ার আগে ধর্ষক আটকের ব্যাপারে কিছু বুঝতে পারে নাই । তিনি একজন ভয়ানক সিরিয়াল রেপিষ্ট। এর আগে সে অনেক নারীর সঙ্গে এই কাজ করেছে তবে তার টার্গেট সব সময় থাকত প্রতিবন্ধি নারী ও শিশুরা। এই কাজ সে আগে একাধিকবার করার কারণে বিষয়টি তার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। ধর্ষক আমাদের কাছে বলেছে এর আগেও অনেক অসহায় নারীকে কমলাপুর থেকে ধরে নিয়ে এসে ক্যন্টরম্যান্ট রেল ষ্টেশনের পরিত্যক্ত কামরায় আটকে রেখে নির্যাতন চালাতো। তিনি ঢাকার বিমানবন্দর, শেওড়া এলাকায় কখনো দিনমজুর, কখনো হকারের কাজ করতেন। তবে এসব পেশার আড়ালে তিনি ছিনতাই, চুরি করতেন এবং মাদকাসক্তও ছিলেন। ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী নারীদের তিনি টার্গেট করতেন।