কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা হাজার ছাড়ালো
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে জেলায় কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত আছে। জেলার সাতটি কেন্দ্রে গত তিন দিনে টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে। ক্রমশ এ সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে টিকা গ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তির সংখ্যা। নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুনজুর রহমান জানান, প্রথম দিন নাটোর সদর হাসপাতাল কেন্দ্রে দুইটি বুথে মোট ২৭ জন টিকা গ্রহণ করেন, দ্বিতীয় দিনে ৮৬ জন। তৃতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার ২৬০ জন টিকা গ্রহণ করেছেন। মানুষের আগ্রহ বিবেচনা করে এবং লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর ভোগান্তি বিবেচনা করে আজ বুধবার থেকে বুথের সংখ্যা একটি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নাটোর সদর হাসপাতালে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা গ্রহণের জন্যে পৃথক বুথে নারী ও পুরুষেরা অপেক্ষা করে ছিলেন। ব্যবসায়ী কাজী বদরুল আলম বলেন, পত্রপত্রিকার রিপোর্ট পড়ে আস্থা হয়েছে বলে টিকা দিতে এসেছি। বুটিক শো রুম ব্যবসায়ী তহমিনা বেগম জানান, আশাকরি টিকা নিয়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকবো। পুঠিয়া ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সমীর ভদ্র সস্ত্রীক টিকা নিয়ে বলেন, প্রায় এক ঘন্টা আগে টিকা নিয়েছি, কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বোধ করছিনা। টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে লাইনে দাঁড়ানোর ক্রম অনুসারে টিকা প্রদানের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ধারাবাহিক ক্রম যেন ক্ষুন্ন না হয়।
হাসপাতালের তিনটি বুথে ছয়জন স্টাফ নার্স টিকা প্রদান করছেন। সিনিয়র স্টাফ নার্স মোসলিমা আকতারী বলেন, আজ মানুষের ভিড় বেশী। প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ব্যবহার করে সবাইকে সন্তুষ্ট করে আমরা কাজ করছি। বুথের ভেতরে এবং বাইরে যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা টিকা গ্রহণকারী আগন্তুক ব্যক্তিদের শৃংখলা সহকারে লাইনে দাঁড়ানো এবং টিকা গ্রহণ কার্যক্রম সমাধা করতে আমার কাজ করছি বলে জানান যুব রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক তানজিল হাসান।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায় বলেন, কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণে মানুষের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। তিনটি বুথে প্রতিদিন প্রায় পাঁচশত ব্যক্তিকে টিকা প্রদানের সক্ষমতা আমাদের আছে।
নাটোর কালেক্টরেটের আইসিটি বিভাগের সহকারী কমিশনার শরীফ শাওন জানান, এ পর্যন্ত টিকা গ্রহণের জন্যে জেলায় প্রায় বারো হাজার ব্যক্তি নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর উল্লেখ করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে প্রিন্ট আউট কপি নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে গেলেই টিকা গ্রহণ করা যাচ্ছে।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান জানান, গত তিন দিনে জেলায় মোট এক হাজার ১৩৪ জন ব্যক্তি টিকা নিয়েছেন। নাটোর সদর হাসপাতাল, কাদিরাবাদ সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ জেলার মোট সাতটি টিকাদান কেন্দ্রে শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন টিকা প্রদান কার্যক্রম চলবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ পিএএ বলেন, জেলার সকল টিকাদান কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম চলছে। মানুষের মাঝে টিকা গ্রহণে আগ্রহও বাড়ছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জেলা কমিটি টিকা প্রদান কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটর করছে।