ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শুরুতে দোলাইরপাড়ে ঘিরে রাখা এই স্থানে স্থাপন করা হবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সেটি স্থাপনের কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে। চলতি ডিসেম্বরেই সমুদয় কাজ শেষ হচ্ছে। চীনে ধাতব পদার্থে তৈরি ভাস্কর্যটি ইতিমধ্যেই দেশে এসে পৌঁছেছে।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার যেখানে শেষ হয়েছে সেখান থেকে মাওয়ার পথে গাড়ি চালিয়ে কয়েক মিনিট সামনে এগোলেই দোলাইরপাড় মোড়ে চোখে পড়বে ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ। উঁচু গোলাকার মঞ্চের মতো বেশ বড় একটি জায়গা সেখানে কালো কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। যে কাঠামোটি কাপড়ে ঢাকা সেটির উচ্চতা মোটামুটি চারতলার মতো। এটিই ভাস্কর্যের মূল বেদি, এর ওপরেই বসানো হবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. সবুজ উদ্দিন খান গতকাল বুধবার ইত্তেফাককে জানান, বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্যটি পৃথক কোনো প্রকল্প নয়; এটা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পেরই অংশ। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালকও (পিডি) সবুজ উদ্দিন খান। তিনি জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বেদিসহ ভাস্কর্য নির্মাণে প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। যে স্থানটিতে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় প্রবেশের প্রধান দ্বার। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া রুটে নির্মিত এক্সপ্রেসওয়েটি বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। মূলত এ দুটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েই এখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ভাস্কর্যের পাশেই নৌকার আদলে তৈরি করা হচ্ছে একটি ফুটওভার ব্রিজ। এটাও বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী। ফুটওভার ব্রিজটি নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ, এটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা।
সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পিডি সবুজ উদ্দিন খান জানান, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির নকশাসহ সম্পূর্ণ ধারণা দেশেই করা হয়েছে। শুধু মূল ভাস্কর্যটি চীন থেকে তৈরি করে আনা হয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে বেদিসহ ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, এ মাসেই সমুদয় কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ভাস্কর্য স্থাপন শেষে প্রথম এক বছর এটির রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে সেনাবাহিনী। এরপর সরাসরি সওজ রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। তবে ভাস্কর্যটির শিল্পী, এর আকৃতি বা অলংকরণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু জানাতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্যটি স্থাপন করে এ বছরের ২৬ মার্চেই সেটি উন্মোচণের কথা ছিল। কিন্তু সেসময় চীনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থাকায় ভাস্কর্য তৈরিসহ বেদির নির্মাণকাজ পিছিয়ে যায়।
সবুজ উদ্দিন খান বলেন, সরকার যেহেতু উদ্যোগ নিয়েছে তাই এটা হবেই। না হওয়ার কোনো কারণ নেই।’ জানা গেছে, ১৬ ডিসেম্বরের আগেই ভাস্কর্যটির স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টি বোর্ড থেকে একটা আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের বিষয় রয়েছে। বোর্ডের অনুমোদনের পর এটি উন্মোচন করা হবে।
সুত্র: ইত্তেফাক