বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রামে আল-আমিন হক বাবু (২৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ রহিমা বেগম (৪৫) ও তাসলিমা আক্তার মৌ (২২) নামের মা-মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। গত বুধবার উপজেলার বনপাড়া পৌর সবার প্রফেসর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্বার করে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতী হলে আজ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আল-আমিন হক বাবু উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের জহুরুল হকের ছেলে।
ফেসবুকে বাবুর হাত-পা বাধা ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি আলোরণ সৃষ্টি হলে মা মেয়েকে আটক করে পুলিশ।
আল-আমিন হক বাবু জানান, বনপাড়া প্রফেসর পাড়া এলাকার আজিজ খাঁয়ের মেয়ে তাসলিমা আক্তার মৌ এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় ৬ মাস পুর্র্বে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের একমাস পরে তাকে তালাক দিয়ে পাবনার এক ছেলেকে বিয়ে করে মৌ। সেখানে কিছুদিন সংসার করার পর সেখানে তালাক দিয়ে আবার বাবার বাড়িতে অবস্থান করে। আমাকে হাসপাতালের বিষয়ে সহযোগীতা চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে আবার আমার সাথে যোগাযোগ হয়। আমাকে আবার বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে ২০ শে আগষ্ট বনপাড়া পৌর সভায় বসে মিমাংসা হয়। মৌ আমাকে বুধবার সকালে ফোন দিয়ে ১০ মিনিটের জন্য তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করতে থাকে। আমি তার অনুরোধ শুনে তার বাড়িতে যাই। আমাকে ভিতর থেকে চাবি দিয়ে বাহির থেকে খুলে ভিতরে প্রবেশ করতে বলে। আমি তার কথা মত বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলে তার চাচা গুরুমশৈল গ্রামের বিল্লাল খাঁ (২৬), মৃত রকমত উল্লাহর ছেলে রবিউল করিম (২৮), মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ, মা রহিমা বেগমসহ আরো কয়েক জন লোক আমাকে দড়ি দিয়ে হাত পা বেধে ফেলে এলোপাতারি ভাবে মারতে থাকে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরে দেখী আমার হাত খোলা এবং তারা বাহিরে। আমি কৌশলে দরজা বন্ধ করে পাশে তাকা ফোন থেকে আমার দুলাভাই নজরুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি জানালে স্থানীয় কাউন্সিলর শিরিন আক্তারসহ পাঁচ জন কাউন্সিলর এসে আমাকে উদ্বার করে।
স্থানীয় ব্যাক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই মেয়েটির সাথে কালিকাপুর গ্রামের আবুল পাটোয়ারীর ছেলে নাজমুল পাটোয়ারীর সাথে দুইবার বিয়ে হয়। পরে লালপুরে বিয়ে হয়। সেখান থেকে ফিরে এসে বাবু সাথে বিয়ে হয়। বাবুর সাথে তালাকের পরে পাবনাতে বিয়ে হয়। পাবনা থেকে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে আবার এই ঘটনা ঘটছে।
জহুরুল হক জানান, বাবুকে উদ্ধার করে স্থানীয় বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেখানে অবস্থার অবনতী হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার জানিয়েছে অতিরিক্ত আঘাতের কারনে তার কিডনী আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। যার ফলে তিন দিন যাবত প্রসাব বন্ধ হয়ে আছে।
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে যদি কোন অপরাধ করে থাকে তার বিচারের জন্য দেশে আইন আছে। কিন্তু যেভাবে আমার ছেলে মারপিট করা হয়েছে। আমি তার বিচার চাই।
মেয়েটির মা রহিমা বেগম আমার মেয়ের ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় টাকা নিত বাবু । তাই কৌশলে তাকে কয়েকটা বাড়ি ধরি দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ তদন্ত্র কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। থানায় অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে থানায় বাবুর বাবা জহুরুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মা মেয়েকে আটক করা হয়েছে।