প্রতিনিধি, বড়াইগ্রাম (নাটোর)
খেজুরের গুড় একটি সুস্বাদু খাবার। ক্রমাগত ভেজাল মিশ্রণের ফলে এখন সেই খাবারে আস্থা হারিয়েছে সকল ক্রেতা। তবে সেই আস্থা ফিরাতে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা বাহিমালী গ্রামে উৎপাদিত হচ্ছে সম্পূর্ণ ভেজালমুক্ত খেজুর গুড়। সেই গুড় দেশের সীমা ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডে রপ্তানি শুরু হয়েছে। আর ভেজাল মুক্ত এই গুড় তৈরী ও বাজারে সরবরাহের দায়িত্ব পালন করছে আলেয়া ফার্ম হাউস নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
শীত মৌসুম আসলেই গ্রামগঞ্জে খেজুর রসের নাস্তা, পিঠা-পায়েসের ধুম পড়ে যায়। রাতের বেলায় গাছ থেকে রস নামিয়ে নাস্তা খাওয়ার মজাই আলাদা। শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে এই এলাকার গ্রামগুলোতে গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। গাছিদের রস, গুড়, সংগ্রহ কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে তা চৈত্র মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে রসের পরিমান কমে গেছে। একই সাথে রস থেকে গুড় তৈরির জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় গুড়ের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা গুড়ের সাথে চিনি, সুগার মিলের চিটাগুড়সহ নানা ধরণের অস্বাস্থ্যকর ক্যামিকেল মিশাতে থাকে। এতে করে হারায় খেজুর গুড়ের স্বাদ, বাড়তে থাকে স্বাস্থ্য ঝঁুকি। এতেই কমতে থাকে খেজুর গুড়ের ক্রেতা।
ক্রেতাদের আসল গুড়ের স্বাদ দিতে গত পাঁচ বছর ধরে আলেয়া ফার্ম হাউস নিজস্ব তত্বাবধানে সরাসরি রস চাষিদের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ক্যামিকেল এবং অন্যান্য ভেজাল মুক্ত খেজুর গুড় তৈরী করে দেশের অভ্যন্তরে “রুট খেজুর গুড়” নামে বাজার জাত করে আসছেন। গুড়ের মান নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে তারা “বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনা পরিষদ” (বিসিএসআইআর) থেকে সনদ এবং বিএসটিআই থেকে টেষ্ট সনদ নিয়েছেন। এবছর তারা ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডে রপ্তানি করেছেন।
আলেয়া ফার্ম হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক বলেন, আমরা আমাদের মনোনীত চাষীদের নিকট থেকে আমাদের সরবরাহকৃত কাঠামো (ভৎধসব) এর মাধ্যমে তৈরীকৃত পাটালি গুড় সংগ্রহ করি। এই গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য নিরাপদ পাত্র এবং খেজুর গাছে বাদুড়সহ অন্যান্য ঝঁুকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে পর্দা সরবরাহ করে থাকি। পরে সংগৃহিত গুড় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্যাকেজিং রুমে মোড়কজাত করে বাজারজাত করি। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের মাঠ কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক নজরদারি করে থাকেন। এক কথায়, মা যেমন পরিবারের নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুতে ভূমিকা রাখে ঠিক তেমনি আমরা গুণগত মানসম্পন্ন খেজুরের গুড় তৈরী করে বাজারজাত করে থাকি। পাটালী, গুড়ের পাউডার ও ঝোলা গুড়, আমরা এই তিন প্রকার গুড় বাজার জাত করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কানাডার ম্যাপল সিরাপ উৎপাদন ও প্রস্তুত প্রণালীর মত বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি স্থাপন করে খেজুর গুড় ও খেজুর গুড় হতে অন্যান্য পণ্য তৈরি করতে চাই। খেজুর গুড় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার। এটি দেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে চাই। নাটোর একটি কৃষি প্রধান অঞ্চল এখান থেকে গুণগত মানসম্পন্ন খেজুর-গুড় তৈরি করে এবং ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে সারাদেশ ও বিশ্ববাজারে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের স্বপ্ন। এতে নাটোর সম্মানিত হবে বাংলাদেশ ও সম্মানিত হবে।
অনার্স-মাস্টার্স এমপিও ভুক্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন, নাটোর জেলার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক, নাটোর মহোদয়ের নিকট “এপ্লিকেশন টু দ্য চিফ অ্যাডভাইজার” স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। বেসরকারি কলেজ সমূহে নিয়োগপ্রাপ্ত অনার্স…