মাদক-যোগে এ বার বলি-অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনকে ডেকে পাঠাতে পারে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। অন্তত একটি ইংরেজি নিউজ চ্যানেল সোমবার রাতে তেমনই দাবি করেছে।
সুশান্ত সিংহ রাজপুত মৃত্যু মামলায় মাদক-যোগে এনসিবি ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের পর সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী এবং তাঁর ভাই শৌভিককে গ্রেফতার করেছে। এ বার সেই সূত্রে অন্যদেরও ডাক পড়ছে। সুশান্তের ঘটনায় ডাক পড়েছে সারা আলি খান এবং শ্রদ্ধা কপূরেরও। ঘটনাচক্রে, যাঁদের বাবার নাম যথাক্রমে সইফ আলি খান এবং শক্তি কপূর। অর্থাৎ, দু’জনেই কঙ্গনা রানাউত বর্ণিত ‘স্টার কিড’।তবে তালিকায় দীপিকার নাম এসে যাওয়া নিঃসন্দেহে গোটা ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যদিও এ দিন রাত পর্যন্ত দীপিকার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নয়। তাঁর টুইটারে শেষ পোস্ট করা হয়েছে গত ১৯ জুলাই।
দীপিকার নাম এসেছে করিশ্মা নামের এক জনের সঙ্গে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের সূত্রে। তাঁকে বুধবার এনসিবি ডেকে পাঠিয়েছে বলে খবর। তাঁর নাম মিলেছে সুশান্তের ঘনিষ্ঠ জয়া সাহার সূত্রে। যাঁকে সোমবার জেরা করেছে এনসিবি। মঙ্গলবারও করবে।
প্রসঙ্গত, করিশ্মা জাতীয় পুরস্কার জয়ী প্রযোজক মধু মন্টেনার ট্যালেন্ট হান্ট সংস্থায় কাজ করেন। যে সূত্রে মন্টেনাকেও ডেকে পাঠাবে এনসিবি।
সম্প্রতি কয়েক জন বলি-তারকার হোয়াটস্অ্যাপ চ্যাট এনসিবি-র হাতে আসে। সেখানে ‘ডি’ এবং ‘কে’ আদ্যাক্ষরের দু’টি নামের কথা জানা যায়। মাদক প্রসঙ্গে তাঁদের মধ্যে একাধিক বার কথা চালাচালি হয়েছে বলে দাবি করে এনসিবি। এর পরেই শোরগোল পড়ে। কে এই ‘ডি’? ‘কে’ই বা কে?
বলিউডের একাংশের দাবি, ‘ডি’ আসলে দীপিকা পাড়ুকোন। আর ‘কে’ হচ্ছেন করিশ্মা। ‘কে’কে বুধবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ‘ডি’ অর্থাৎ দীপিকাকেও সমন পাঠানো হবে বলে খবর।
করিশ্মা কাজ করেন ‘কওয়ান ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’তে। সেই সূত্রেই তাঁর দীপিকার সঙ্গে কথা হত। কারণ, মন্টেনার ওই সংস্থায় দীপিকার ম্যানেজার ছিলেন করিশ্মা।
ঘটনাচক্রে, মন্টেনার একটা টলিউড যোগও আছে। তবে তার সঙ্গে মাদকের কোনও যোগ নেই।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রথম ছবি ‘অটোগ্রাফ’-এর সহ-প্রযোজক ‘কওয়ান ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’র কর্ণধার মন্টেনা। ওই ছবির নায়িকা নন্দনা সেনের বন্ধু ছিলেন তিনি। পরে মন্টেনা বিয়ে করেন ভিভ রিচার্ডস ও নীনা গুপ্তের মেয়ে মাসাবাকে। যদিও পরে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।
মন্টেনা অন্তত ২৫টি ছবির প্রযোজক। যার মধ্যে আছে ‘গজনি’, ‘সুপার থার্টি’, ‘কুইন’, ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর মতো ছবি। ঘটনাচক্রে, ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর কাহিনি কিন্তু মাদককে কেন্দ্র করেই। শোনা যাচ্ছে, মন্টেনাকেও ডেকে পাঠাতে পারে এনসিবি।
দীপিকাকে ডেকে পাঠানোর সম্ভাবনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই ফের সরব হয়েছেন কঙ্গনা। সোমবার রাতে তিনি টুইট করেছেন, ‘দীর্ঘ মাদকাসক্তি অবসাদের কারণ। সমাজের তথাকথিত উচ্চ সম্প্রদায়ের তারকা-সন্তানরা, যারা নিজেদের সেরা ভাবে, যাদের বেড়ে ওঠা ভাল পরিবেশে, তারাই ম্যানেজারের কাছে জানতে চায়, মাল আছে কি?’
সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর নিজের অবসাদের কথা ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন দীপিকা। তখনও তাঁকে কটাক্ষ করেছিলেন কঙ্গনা। ‘অবসাদের নামে ব্যবসা চালাচ্ছে’ এমন মন্তব্যও করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে।
বলিউড তারকাদের মধ্যে নিজের অবসাদ নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন দীপিকা। তখন তিনি লিখেছিলেন, ‘রিপিট আফটার মি: ডিপ্রেশন ইজ ট্রিটেবল’। অর্থাৎ, অবসাদের চিকিৎসা হয়।
আজ কঙ্গনা তাঁর টুইট শুরুতে লিখেছেন, ‘রিপিট আফটার মি: দীর্ঘ মাদকাসক্তি অবসাদের কারণ’।
প্রসঙ্গত, দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনে সমর্থনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন দীপিকা। কেন্দ্রীয় সরকার তথা শাসকদল বিজেপি কিন্তু বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি। তার কয়েক দিন পরেই দীপিকার ছবি ‘ছপক’ মুক্তির কথা ছিল। বিজেপির একাংশ বলেছিল, ছবির প্রমোশন করতেই দীপিকা ওখানে গিয়েছিলেন। অভিনেত্রীর প্রতি চূড়ান্ত কটাক্ষও ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল সেই সময়।
কাকতালীয় ভাবে, বক্স অফিসে ‘ছপক’ একেবারেই ভাল ব্যবসা পায়নি।
সুত্র : আনন্দ বাজার পত্রিকা