নাটোরে বহুল আলোচিত সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহারের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী কলেজ ছাত্র মামুন হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আজ(১৫ আগস্ট) বিকেল সারে ৫ টার দিকে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীনের আদালতে তোলা হলে তিনি তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ সময় মামুনের জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার স্বপন।
কোর্ট ইনস্পেক্টর নজমুল হক জানান, আসামিপক্ষ তার জামিন আবেদন করে। আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন
কোর্ট জিআরও খাদেমুল ইসলাম একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ (১৫ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে তাকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে
আদালতে সোপর্দ করা হয়।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ জানান, রোববার রাতে কলেজ শিক্ষিকার চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। মামলায় কাউকে অভিযুক্ত না করায় আটক মামুনকে ৫৪ ধারায় আজ দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. পরিতোষ রায় জানান, ময়নাতদন্তে কলেজশিক্ষকার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশের সুরতহাল ও মেডিকেল টিমের রিপোর্টে হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়ায় আলামত ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন তাদের দাম্পত্য কলহের কথা স্বীকার করেছেন। মামুন জানান, শনিবার রাত স্বামী স্ত্রী ঝগড়া হলে তিনি খাইরুনকে লাথি মেরে রাত আনুমানিক ২টার দিকে বাইরে চলে যান।
এরপর শিক্ষক খাইরুন নাহার বেশ কয়েকবার ফোন করলেও মামুন ফোন রিসিভ করেননি। সেদিন রাত ২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে মামুনের ঘোরাঘুরির তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এক বছর আগে ফেসবুকে শিক্ষিকা নাহারের সঙ্গে একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র মামুনের পরিচয় হয়। পরে তাদের দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পরে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করেন তারা।
বিয়ের ৬ মাস পর তাদের সম্পর্ক জানাজানি হলে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ে মেনে নেয়নি।
এই অসম বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়।
ওই কলেজ শিক্ষিকা এর আগে বিয়ে করেছিলেন রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার এক ছেলেকে। পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। প্রথম স্বামীর ঘরে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে বলে জানা যায়।