সিংড়া প্রতিনিধি : মাত্র তিন কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজের জন্য বরাদ্দ ২কোটি ২৭লাখ ৮২হাজার টাকা। তারপরও সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে রাবিশ এবং আবর্জনা। নাটোরের সিংড়া উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ চৌগ্রাম-টু-কালিগঞ্জ সড়কের স্থাপনদীঘি থেকে পাকিশা বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজে এমন ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া পুরনো রাবিশ দিয়ে যেমন তেমনভাবে সড়ক সংস্কার করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে প্রকল্প তদারকির কাজে নিয়োজিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিপ্লব আলী কাজের মান নিয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারে খোয়ার পরিবর্তে পুরোনো রাবিশ ও আবর্জনা মিশ্রিত নামমাত্র খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরোনো রাবিশ দিয়ে যত্রতত্র ভাবে সড়ক সংস্কারের ফলে ধুলো-ময়লার কাজ বলে মনে হচ্ছে।
সিংড়া উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম-টু-কালিগঞ্জ সড়কের স্থাপনদীঘি থেকে পাকিশা বাজার পর্যন্ত ২কোটি ২৭ লাখ ৮২ হাজার ১০ টাকা চুক্তি মূল্যে ৩কিলোমিটার পাকা সড়ক সংস্কার কাজ করছেন নাটোর শহরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সরকার কনষ্ট্রাকশন। এ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সুজিত কুমার সরকার।
চুক্তি মোতাবেক সড়কে ৩ইঞ্চি খোয়া দেয়ার কথা থাকলেও গত ১৭ ও ১৮এপ্রিল পর পর দু’দিন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো রাবিশ এর উপর আবর্জনা মিশ্রিত নামমাত্র খোয়া দিয়ে দায়সারাভাবে সংস্কার কাজ চলছে। রোলিংয়ের পরও পাকা সড়কটিতে চকপাউডার এর মতো ধুলো-বালি উড়ছে। এতে চলাচলকারী সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এসময় সাংবাদিকদের ছবি তোলা দেখে তড়িঘরি করে আবর্জনা ঢেকে দিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন কাজে নিয়োজিত হেড মিস্ত্রি আব্দুল কাদের।
স্থানীয় কৃষক হারেজ আলী বলেন, সিংড়ার এটি জনগুরুত্বপূর্ণ একমাত্র রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে চলনবিলের কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য আনা-নেয়া ছাড়াও লক্ষাধিক লোকের চলাচল। কিন্তু বরাবরই পুরোনো রাবিশ দিয়ে যত্রতত্র ভাবে রাস্তা সংস্কারের ফলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয় ভ্যান চালক মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, নিম্নমানের পুরোনো খোয়া দিয়েই রাস্তা সংস্কারে ভ্যানগাড়ী চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এতো নিম্নমানের কাজ হচ্ছে যে, রাস্তা দুই দিনও টিকবে না। আর আমরাতো গরীব মানুষ, আমাদের কথা কে বা শুনে।
আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সুজিত কুমার সরকার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। তবে আপনার যেটা চাওয়া আমার ম্যানেজারকে ফোন লাগিয়ে দিবেন আমি বলে দিব ওরা ইয়ে করে দিবে। নিউজ না করার জন্য তিনি এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে যাওয়া-আসার সন্মানী দিতে চান। তবে তিনি নিঃসন্দেহে কাজ ভাল হচ্ছে বলে দাবি করেন।
তবে কাজ তদারকি কাজে নিয়োজিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. বিপ্লব আলী মুঠোফোনে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসান আলী বলেন, অভিযোগের বিষয়গুলো তিনি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে দেখবেন।
এবিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের কাজ করার সুযাগ নাই। আমি কাজটি দেখে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।