রাজশাহী মহানগরীতে কমিউনিটি ও বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সহিংস উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনের লক্ষ্যে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী আঞ্চলিক কনসালটেশন ওয়ার্কশপ। ১৩ই এপ্রিল সকাল ১০:০০ টায় রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভার ভিউ হোটেলে বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট ও ইউনাইটেড নেশনস্ অফিস অন ড্রাগস্ অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি)’র যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন এসএম রুহুল আমিন, অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ, এন্টি টেররিজম ইউনিট। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মো: আব্দুল বাতেন, বিপিএম, পিপিএম, ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জ এবং মো: আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), পুলিশ কমিশনার, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, রাজশাহী।
উক্ত কর্মশালায় কমিউনিটি ও বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে কৌশল নিয়ে একটি পেপার উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড নেশনস্ অফিস অন ড্রাগস্ অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএসওডিসি)’র অফিসার ইনচার্জ এস এম নাহিয়ান।
এ কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য হলো জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে লক্ষ্যে বিট ও কমিউনিটি পুলিশিংকে জোরদার করা, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে সহায়ক হিসেবে কাজ করা।তাছাড়া জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বিদ্যমান বিচ্যুতি, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি হবে, তা এ কর্মশালায় আলোচনা করা হয়।
কর্মশালায় বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) প্রধান ও অ্যাডিশনাল আইজিপি এস এম রুহুল আমিন তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, বর্তমানে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের কারণে কোনোভাবেই যাতে এ উন্নয়নের ধারা বাধাপ্রাপ্ত না হয়,সেদিকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের প্রকোপ কমেছে। তবে অন-লাইনভিত্তিক জঙ্গি রিক্রটের মটিভেশনাল কাজ গোপনে চলছে।এখনই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।এজন্য বিট পুলিশিং কর্মকর্তা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মো: আব্দুল বাতেন, বিপিএম, পিপিএম তাঁর বক্তব্যে বলেন, গুলশানের হলি আর্টেজানের জঙ্গি নাশকতার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সামনের দিকে আমাদের আরও আধুনিক ও যুগোপযুগী প্রযুক্তির সংশ্লেষ ঘটিয়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসের আগাম তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য কমিউনিটি ও বিট পুলিশিংয়ের কোনো বিকল্প নাই। তিনি বিট পুলিশিং সদস্যদের এ ব্যাপারে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার মো: আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম(বার) বলেন, কিছু কায়েমী ও স্বার্থন্বেষী মহল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি জন্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে নানা রকম অপতৎপরতা চালাচ্ছে।বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির ভিত্তিতে কাজ করে চলেছে।আমার বিশ্বাস আজকের কর্মশালায় উপস্থিত বিট পুলিশিং কর্মকর্তা এবং কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের এ সংক্রান্তে তাদের জ্ঞানের ভিত্তিকে আরও মজবুত করবে। সেইসাথে তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী রেঞ্জের রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিট ও পুলিশিংয়ের তদারকী কর্মকর্তা ও বিট পুলিশিং অফিসার এবং রাজশাহী বিভাগের কমিউনিটি পুলিশ সদস্য-সহ সর্বমোট ৩৮ জন এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালার উদ্বোধনীতে যৌথভাবে সঞ্চলনা করেন এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রকিবুল ইসলাম হাসান ইবনে রহমান ও সহকারী পুলিশ সুপার ওয়াহিদা পারভীন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন, এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি টিএম মোজাহিদুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) মো: রশীদুল হাসান, পিপিএম, আরএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো: ফারুক হোসেন, রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার), এটিইউ, ঢাকার পুলিশ সুপার মোছা: শিরীন আক্তার জাহান, আরএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো: আল মামুন, ইউএনওডিসি’র ন্যাশনাল কনসালটেন্ট প্রফেসর ড. আলী আশরাফ ও আরএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম প্রমুখ।