নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গড়মাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন শহীদ নির্মানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
২০১৮ সালে নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস এর প্রচেষ্টায় শহিদ মিনার নির্মানের জন্য ৭০ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্ধ আসে এই বিদ্যালয়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে স্বরজমিনে গড়মাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় ৯০ এর দশকে নির্মিত নামমাত্র শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে হয় কোমল মতি শিশুদের। নতুন শহীদ মিনার নির্মানের জন্য ২০১৮ সালে বরাদ্ধের টাকা দিয়ে ৩ হাজার ইট কিনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অজত্নে ফেলে রাখেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি এবং স্থানীয় আওয়ামীগ নেতা একই গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাহফুজ। যা এখনো দৃশ্যমান।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার জানান- এই বরাদ্ধের টাকা উত্তোলন এবং শহিদ মিনার নির্মানের লক্ষ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে এবং সকলের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা সম্পূর্ণ উত্তোলন করেছেন সভাপতি সাহেব। বরাদ্ধের টাকা উত্তোলন হওয়ার পরে গত ২ বছরেও কেন শহীদ মিনার হয়নি জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক কোন কথা বলবেন না মর্মে সভাপতি মাহফুজুর রহমানের সাথে কথা বলতে বলেন।
এলাকাবাসী অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মাহফুজের বিভিন্ন অনিয়ম এবং দূর্নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন- বাংলাদেশের জন্য যারা বিভিন্ন সময় জীবন দিয়েছেন তাদের স্মরণে করা শহীদ মিনারের টাকা আত্মসাৎ এটা খুবই দুঃখজনক এবং জাতীর জন্য লজ্জাস্কর। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারন করে যারা নিজেকে বর্তমান সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতা বলে দাবি করেন, তাদের দ্বারা এধরনের দূর্নীতি ‘দেশরত্ন জন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান’ কে বিক্রি করার শামিল। তারা আরও জানান- মাহফুজুর রহমান বিগত কিছুদিন আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ এর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে গড়মাটি গ্রামের কাটাখালি খাল লিজ দিয়ে গ্রামবাসীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় বিপুল অঙ্কের টাকা। অথচ এই খাল সরকারি ভাবে ভোগ করার অধিকার একমাত্র মৎসজীবিদের। এবিষয়ে সে সময় বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় কয়েক দফায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। নিজেকে বড় নেতা দাবি করা মাহফুজের বিভিন্ন দূর্নীতির তিব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত শহিদ মিনারের টাকা ফেরত এবং অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে অপসারনের দাবি জানান এলাকাবাসী।
এ সকল বিষয়ে জানতে চাইলে, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাহফুজ মুঠো ফোনে জানান- ‘আমাদেরও চলতে হয়, রাজনীতি করতে অনেক টাকার প্রয়োজন, আমি সম্মানিত পরিবারের সন্তান, আমার দিকে একটু খেয়াল রাখবেন, আমাকে একটু বাাঁচাবেন’ আমি ঢাকায় আছি ফিরে এসে স্বাক্ষাতে কথা বলবো। ঢাকা থেকে ফিরে গত ৯মার্চ সন্ধায় তথ্য সংগ্রহকারী সাংবাদিক কে ফোন করে দেখে নেওয়ার হুমকি এবং মাঠে ময়দানে সাবধানে চলার পরামর্শ দেন মাহফুজ।