আদালতের তদন্ত অবস্থা উপেক্ষা করে নাটোরের লালপুরে বহুল আলোচিত আড়বাব ইউনিয়নে বিলশলীয়া বিলে খাস জমি দখল করে ও ব্রিজে পানি প্রবাহের প্রবেশ মুখ বন্ধ করে খনন করা পুকুরটি তড়িঘড়ি করে ভরাট করার নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। এক সরকারী কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে তাঁর স্বজনরা পুকুরটি খনন করে। ওই খানে পুকুরে সরকারী ডহরের জমি দখল করে পুকুর খনন করার বিষয়টি সত্যতা পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নাটোর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল ইসলাম, লালপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম্মী আক্তারকে এই নির্দেশ দেন। অথচ ব্রিজের পানি প্রবাহের মুখে পুকুর বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এতে ওই বিলের শত শত বিঘা জমিতে জলবদ্ধতার আশংকা রয়েছে গেছে বলে জানান কৃষককেরা। খাস জায়গা দখল করে ও ব্রিজের পানি প্রবাহের মুখ বন্ধ করে পুকুর খনন এই শিরোনামে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকার অনলাইনে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে । ২৮ এপ্রিল দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার অনলাইনে ৩য় পাতায় প্রকাশিত সংবাদটি নাটোর আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ এর নজরে পড়ে । প্রতিবেদনটি দেখে খাস জমি দখল করে পুকুর খননের বিষয়টি বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১৩ এর ৪ ধারা সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ধারা ১৫ অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ । উক্ত অপরাধের ধারা অনুযায়ী বিষয়টি ২৯ এপ্রিল আমলে নেন আদালত । কিন্তু পৃথক পৃথক দুইটি আপরাধ কার কার দ্বারা সংগঠিত হচ্ছে তাদের বিস্তারি নাম ও ঠিকানা পত্রিকায় সুস্পষ্ট নই। সাক্ষীদের নাম ও ঠিকানাও প্রতিবেদনে নাই । সুতরাং অপরাধটি কাদের দ্বারা সংগঠিত হচ্ছে তা প্রাথমিক তদন্তের মাধ্যমে নিরুপন করা প্রয়োজন এবং আমলে গৃহীত অপরাধ সূমহ তদন্তের মাধ্যমে আসামীদের সনাক্ত করা প্রয়োজন । এমর্মে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত কালে আসামীদের সনাক্তকরণ, সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ করবেন । ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ,লালপুর নাটোরকে নির্দেশ দিয়েছেন জুডিসিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ । এবং ২০ মে ২০২১ খৃষ্টাব্দের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরনের নির্দেশ দেওয়া হয় । আদালতের এই নির্দেশনা অপেক্ষা করে নাটোর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম , লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি শাম্মী আক্তারকে ৫ মে উপজেলার বিলশলীয়া বিলের খাস জমি দখল করে খননকারী পুকুরটি ভরাট দিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, খাস জমিতে পুকুরটি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক । অথচ ব্রিজ দিয়ে পানি প্রবাহের মুখ বন্ধ করে পুকুর খনন করা হয়েছে । এই অংশের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । তিনি আরো বলেন, বিলের জলবন্ধতার আংশকা থেকেই গেল ।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা লালপুর থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, আদালতের তদন্তের নির্দেশ পেয়েছি । তদন্ত শেষে সঠিক সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করা হবে ।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি শাম্মী আক্তার বলেন , আদালতের তদন্তর বিষয়টি জানা নেই ।
এ ব্যাপারে, নাটোর জুডিসিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি রিতিমত তাঁরা আদালতকে অবমাননা করেছেন। যেহেতু বিষয়টি এখন আদালতের। তাঁরা খাস জমি দখল করে খননকারী পুকুরটি ভরাট করে বন্ধের নির্দেশ দিতে পারে না।