বাগাতপিাড়া প্রতিবেদক:
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে ইভা খাতুনের। তার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্রতা। ইভা মাগুরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সলইপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র ঝরণা বেগমের মেয়ে সে।
ইভার বয়স যখন ২ বছর ৪মাস তখন তার বাবা কিডনি জনিত রোগে মারা যান। এর পর থেকে ছোট্ট শিশু ইভা মায়ের অভাব-অনটনের সংসারে বড় হতে থকে। স্বামীর রেখে যাওয়া ১৫ শতাংশ জমি সেটাও তার চিকিৎসা করাতে বন্ধক রাখতে হয়েছে। মা ঝরণা বেগম পড়া লেখায় এসএসসি পাশ। তাই অল্প শিক্ষিত হয়ে অন্যের শিশুদের প্রাইভেট পড়িয়ে জমানো টাকায় চলতো সংসার।
বামে ইভার মা ঝরণা বেগম এবং ডানে ইভা খাতুন
একই উপজেলার দয়ারামপুরে নানার বাড়ি হওয়াতে সেখান থেকে পেতো কিছু সহযোগিতা। এছাড়া নানার বাড়ি থেকে কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ পেয়ে পাশ করেন ইভা। প্রথমে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলেও পড়ার সুযোগ হয় রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ে। কিন্তু বাবার ইচ্ছে পূরণ করতে হাল ছাড়েননি ইভা। নতুন করে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকে সে। পুনরায় চলতি বছরে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪৪৫১ হয়ে মাগুরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ হয় তার। কিন্তু মেধা তালিকায় স্থান পেলেও মেডিকেলে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ইভার পরিবার।
ইভার মা ঝরণা বেগম বলেন, ‘মেয়ে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে এতে আমি অনেক খুশি। কিন্তু আর্থিক অভাব-অনটনের সংসার আমার। অনেক কষ্ট করে মেয়েকে এত দূর এনেছি। মেডিকেলে ভর্তি করাসহ পড়াশোনার ব্যয় বহনের মতো অবস্থা আমার নেই। কীভাবে মেয়ের ভর্তির টাকা জোগাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।’ সকলের সহযোগিতা পেলে তার মেয়ের জন্য তা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি ।
ইভা বলেন, আমার মায়ের সহযোগিতায় বাবার স্বপ্ন পুরণ করতে আজ আমার ডাক্তারি পড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। অর্থাভাব আমার পড়া লোখার প্রধান বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। বিত্তবানদের সহায়তা ছাড়া মেডিকেলে ভর্তি ও ডাক্তারি পড়া অসম্ভব বলে জানান ইভা।