প্রজাতন্ত্রের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জাতির পিতার ভাস্কর্যবিরোধী অপতত্পরতার বিরুদ্ধে মাঠে নামছেন আজ। পুলিশ বাহিনীসহ সব ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজকের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে এই দিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়রুল ইসলাম এতে উপস্থিত থাকছেন না বলে জানা গেছে।
বিভাগীয় শহর, জেলা শহর এবং উপজেলা শহরেও একই সময়ে অনুরূপ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যাবতীয় এই কর্মকাণ্ড সমন্বয় করছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ ইত্তেফাককে জানান, আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয়ভাবে প্রজাতন্ত্রের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত জাতির পিতা। তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কোনো মন্তব্য এবং তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পরিচালিত যে কোনো অপতত্পরতা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা বরদাশত করবে না। যে কোনো মূল্যে তা প্রতিহত করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি চরমপন্থি গোষ্ঠী সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির যে অপতত্পরতা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে একটি কঠিন বার্তা এই সমাবেশ থেকে জানানো হবে। তিনি বলেন, ধাপে ধাপে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই অশুভ গোষ্ঠীর চক্রান্ত প্রতিহত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা বদ্ধপরিকর।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর সেই নির্বাচনকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে ঐ নির্বাচনের গঠিত সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গঠিত জনতার মঞ্চে এসে প্রকাশ্যে একাত্মতা প্রকাশ করেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। এছাড়া ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সেই সময় আইন সংশোধন করে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সচিবালয় ছেড়ে রাজপথে বেরিয়ে আসেন। পরবর্তী সময়ে আইন সংশোধন করা হয় এবং সরকারের আপিলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। ইতিমধ্যে ফাঁসির রায় কার্যকর করেছে সরকার। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে একটি অপশক্তির তত্পরতার বিরুদ্ধে আবারও মাঠে নামছেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। যদিও ইতিমধ্যে ভাস্কর্যবিরোধী এ গোষ্ঠীর অপতত্পরতা রুখতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল ও তার অঙ্গসংগঠন যুবলীগসহ একাধিক সংগঠন মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।
স্বাধীনতার সপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও ভাস্কর্যবিরোধী কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এর সঙ্গে পৃথকভাবে হলেও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মাঠে নামার বিষয়টি আন্দোলনে নতুন মাত্রা পাবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
সুত্র: ইত্তেফাক