নাটোরের বড়াইগ্রামে তিনজনের ডেঙ্গু রোগ সনাক্ত হয়েছে। দুইজন উপজেলা হাসপাতাল ও একজন বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্যা কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, উপজেলার আটাই গ্রামের নাসির উদ্দিন (২৫), গোপালপুর গ্রামের মৃত আব্বাস মোল্লা পুত্র রফিকুল ইসলাম (৫০), বনপাড়া পৌরসভার হারোয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী লৎফুন্নেছা (৬০) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। নাসির উদ্দিন ও রফিকুল ইসলামকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি রেখে এবং লৎফুন্নেছাকে বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নাসির উদ্দিন স্ত্রী খুশি বেগম বলেন, আমার স্বামী কৃষি শ্রমিক। বাড়িতেই থেকেই দিন মজুরের কাজ করত। হঠাৎ কয়েকদিন আগে থেকে শরীরে ব্যাথা ও জ্বর শুরু হয়। হাসাপাতালে আসার পর পরীক্ষা ডেঙ্গু রোগ সনাক্ত হয়।
ডেঙ্গু রোগী রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শরীরে জ্বর জ্বর ভাব ছিল। শরীরে হাত দিলে লাগত। শরীরের গিড়ায় গিড়ায় ব্যাথা হত।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রী কয়েকদিন যাবত পেট-মাথা ব্যাথাসহ জ্বরে ভুগতেছিলেন। রোববার তাকে বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষন শনাক্ত হয়। বাড়িতে রেখেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র খাওয়ানো হচ্ছে।
বনপাড়া এলাকাবাসী আবু মুসা বলেন, ডেঙ্গু রোগী ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। জরুরী ভাবে ব্যাবস্থা গ্রহন করা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশাদুজ্জামান এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, ডেঙ্গু রোগ মশা বাহিত। এটি প্রতিরোধে জনসচেতনা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, এই মুহুর্তে আমরা ভয়াবহ মনে করছি না। তবে আমরা সতর্ক আছি।
বনপাড়া পৌর মেয়র কে.এম জাকির হোসেন বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণ সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে উঠান বৈঠক, মাইকিং ও মশক নিধন কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা দিন রাত জনসচেতনতায় সচেষ্ট আছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ গৃহিত কর্মসুচী চলমান রয়েছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগে আক্তান্ত ব্যাক্তিরা যাতে সঠিক চিকিৎষা প্রায় সেদিকে নজরদারী রাখা হয়েছে।
এদিকে বনপাড়া পৌর শহরে ডেঙ্গু জ্বরের রোগী সনাক্ত হওয়ায় জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচারাভিযান শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গু মোকাবেলা ও প্রতিকারের উপায় জানাতে পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছেন। পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছেন।
মেয়র কেএম জাকির হোসেন জানান, করোনার ভয়াবহতা এখনও না কাটতেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে জনগণের করুণ দশা হবে। তাই এই প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি হওয়ার আগেই এর মোকাবেলা করতে পৌর কর্তৃপক্ষ শক্ত অবস্থান নিয়েছে। মশা নিধন কার্যক্রম ও মাইকিং সহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পৌর স্বাস্থ্য বিভাগ সহ সকল কাউন্সিলরগণ এক যোগে কাজ করছে।