বিকেলে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন থেকে ঘোষিত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে ঘোষণার সাত ঘণ্টার মধ্যে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকসহ দুটি পদে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে রোকোনুল ইসলামকে বাদ দিয়ে শামীম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
গতকাল(২৭ জুলাই) বুধবার রাত ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে রদবদলের লিখিত ঘোষণা দেন। তাঁর এই ঘোষণাপত্র রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে প্রায় আট বছর পর গতকাল(২৭ জুলাই) লালপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি পদে ১২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৪ জন প্রার্থী হন। দ্বিতীয় অধিবেশনে আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বিকেল চারটার দিকে সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নতুন কমিটিতে সভাপতি হিসেবে আফতাব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রোকোনুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে শামীম আহমেদের নাম ঘোষণা করা হয়।
প্রধান অতিথির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুস্তাফিজ মিশুর সরবরাহ করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রোকোনুল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়।
কমিটির ঘোষণার পরপরই নাটোর জেলার আওয়ামী লীগ সমর্থক ফেইসবুক ব্যবহারকারী উক্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদে ঘোষিত রোকোনুল ইসলামকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ করতে থাকেন এবং তা ভাইরাল হয়ে যায়। জেলা আ.লীগের বিরুদ্ধে অর্থ লেনদেনেরও অভিযোগ তোলেন অনেকে।
এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ রাত ১১টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রে উপজেলা আওয়ামী লীগের সংশোধিত নতুন কমিটি প্রকাশ করা হয়। এতে সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আমিনুল ইসলামকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাতেই এই পরিবর্তনদের খবর জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনস্থলে কমিটি ঘোষণার পর তাঁদের কাছে অভিযোগ আসে— সরকারি কর্মচারীকে মারধরের এক মামলায় রোকনুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। পরে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সত্যতা পান। এরপর সংগঠনের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি বজায় রাখতে রোকোনুলের যায়গায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রোকোনুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনে সবার সম্মতিক্রমে মঞ্চে প্রধান অতিথি তাঁকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধান অতিথির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। অথচ সম্মেলন শেষে জেলার কয়েকজন নেতা নাটোরে ফিরে নিজেদের ইচ্ছেমতো রদবদল করেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।