সম্প্রতি নাটোর জেলা পুলিশ সুপারের অফিস আদেশে জেলার গুরুদাসপুর থানার ওসি আব্দুল মতিনকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স নাটোরে বদলি করা হয়। এই বদলীর আদেশ নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৫ মামলার আসামি গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামের একটি বক্তব্যের ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গত ১৮ এপ্রিল নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন নজরুল ইসলাম। এ সময় তিনি দম্ভ করে বলেন, ‘আমি জেল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠানোর পর গুরুদাসপুর থানার ওসিকে বদলি করা হয়েছে।’
এর আগে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় গত ২ এপ্রিল আদালতের আদেশে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান ওসি মতিন। সেই থেকে নজরুল ইসলাম ওসি মতিনের উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ১৬ দিন কারাভোগের পর নজরুল ইসলাম জামিনে মুক্ত হয়ে ওসি মতিনকে নিয়ে এমন বক্তব্য দিলেন।
ওসি মতিন জামায়াত-বিএনপির মুখপাত্র ছিলেন দাবি করে ভিডিওতে নজরুল বলেন, সেখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে বুঝে উঠতে না পেরে অনেকে তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন কাজে সম্পক্ত হয়েছিলেন। আমিও তাঁদের মতো ভুল করে তাঁর সঙ্গে নানা কাজে সম্পৃক্ত হই। যখন বুঝতে পারি এই ওসি আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে, তখন থেকে তাঁর সঙ্গে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করি। এ জন্য ওসি আমার নামে মিথ্যা মামলা করার প্ররোচনা দিয়েছেন।
নজরুল ইসলাম নবগঠিত গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ৫টি মামলা ও একটি নিয়োগ জালিয়াতি মামলা হওয়া তাকে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ এনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এর মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। একই দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১৮ এপ্রিল অস্থায়ী জামিনে মুক্তি পান তিনি।
এদিকে নজরুলের মন্তব্যের বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার বিদায়ী ওসি আবদুল মতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বদলির বিষয়টি রুটিন অনুযায়ী হয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় নজরুল ইসলামকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি তাঁর ভাইরাল হওয়া বক্তব্য সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
তিনি আরও বলেন, “তিনি এমন বক্তব্য দিয়ে থাকলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”