গত এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত মোট ১০ দিনব্যাপী এই নাট্য কর্মশালার সমাপনি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংগঠক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ মুহম্মদ নাসিহ্ এবং বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক অধ্যাপক সুবীধ কুমার মৈত্র (অলক)।
নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পর নাটোরের গুণী ও অগ্রজ নাট্যব্যক্তিত্বরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত ও নতুন এই সংগঠন ‘লোকজ বাংলা’র নাট্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে উৎসাহব্যঞ্জক বক্তব্য রাখেন।
অধ্যাপক সুবীধ কুমার মৈত্র (অলক) বলেন, তাঁর সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক জীবনের সোনালী অতীত নিয়ে বেঁচে থাকলেও বর্তমানের সাংস্কৃতিক সংকটের কারণে হতাশা কাজ করে। সেই হতাশার কালো ছায়া দূর করে লোকজ বাংলা আলো জ্বালবে এবং আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি দিতে কাজ করে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ইঙ্গিত থিয়েটারের দলপ্রধান এড. সুখময় বিপলু তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, লোকজ বাংলা ও শিল্পকলা একাডেমির এই নাট্য কর্মশালার মতো আগামীর আরও নানান আয়োজনে ইঙ্গিত থিয়েটার অংশ নিতে চায় এবং বর্তমান সাংস্কৃতিক সংকট উত্তোরণে লোকজ বাংলার সাথে পারষ্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে কাজ করে যেতে চায় তাঁর সংগঠন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার রাকিবিল বারি, বাগাতিপাড়ার বকুল স্মৃতি থিয়েটারের নাট্যকর্মী ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার-ইলামিত্র অঞ্চলের সমন্বয়কারী মশগুল হোসেন ইতি ও লালপুরের চলন নাটুয়ার নাট্যকার ও নির্দেশক ফারুক হোসেন।
নাট্য কর্মশালার মুখ্য প্রশিক্ষক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মামুন রেজা বলেন, নাটোরের নাট্যাঙ্গনে বিভিন্ন নাট্য সংগঠনের পাশাপাশি নতুন ধারার ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে নাট্য প্রযোজনা ও নতুন নাট্যকর্মী তৈরির লক্ষ্যেই এই নাট্য কর্মশালার আয়োজন। বিশেষ করে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই কাজটি করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাকাম সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক পরিতোষ অধিকারী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান, বিশিষ্ট কবি ও শিশু সংগঠক আশিক রহমান টিটু, নাটোর জেলা লালন একাডেমির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন প্রমুখ।
১০ দিনব্যাপী এই নাট্য কর্মশালার সমাপনি ও সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে মঞ্চস্থ হওয়া ইমপ্রোভাইজ্ড নাটক ‘চিঠি ও পরিত্যক্ত বাক্স’ নাটকটিতে অভিনয় করেন শিশু শিল্পী সৌম্যজিৎ মৈত্র, সামিয়া রুসাফা, তন্ময় শীল, ইসমত আরা নদী, ফারিহা আক্তার মমো, নিবেদিতা মৌলিক, স্বস্তিকা মৈত্র ত্রয়ী, শুভাশীষ মৌলিক, রমা শীল, অনন্যা শ্রাবস্তী, নয়ন হালদার, এস. এম. রিয়াজুল হক ও সৈয়দ মাসুম রেজা।
নাট্য কর্মশালায় সহযোগী নির্দেশক হিসেবে ছিলেন কুমিল্লার রেপার্টরি গার্ডেন থিয়েটারের নাট্যকার ও নির্দেশক আতিকুর রহমান সুজন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন লোকজ বাংলার নাট্যকার ও নির্দেশক সৈয়দ মাসুম রেজা।