নাটোরের লালপুরে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে অপমৃত্যুর ঘটনা। পারিবারিক কলহসহ ব্যক্তিগত নানা সমস্যার কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকে। চলতি বছরের সাড়ে ৯ মাসে ৪৬ অপমৃত্যুর মধ্যে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন ৩০ জন। যা গত বছরের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। আর আত্মহত্যার প্রবণতা নারীদের মধ্যে বেশি থাকলেও বর্তমানে পুরুষদের মধ্যে বেড়েছে। এবিষয়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়লেও আত্মহত্যা রোধে লালপুর উপজেলা প্রশাসন বা লালপুর থানার কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায় নি।
লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এউপজেলায় অপমৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। এর মধ্যে বিষপানে ১৯ এবং ঝুলন্ত অবস্থায় ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানুয়ারি হতে ৯জুন পযন্ত মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের, পরের চার মাসেই সংখ্যা দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছে। এবছরের সেপ্টেম্বরেই সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২০২২ সালে অপমৃত্যু হয়েছে ৩৮টি, যার মধ্য ৩৫ জন আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। এর মধ্যে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয় ২১ জনের ও বিষপানে মৃত্যু হয় ১৪ জনের আর তিনজনের অপমৃত্যু হয়েছে।
এবিষয়ে মানবাধিকার কমবাইন্ড লালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সাহীন ইসলাম বলেন, সামাজিক অবক্ষয়, হতাশা থেকেই মানুষ সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করছে। আত্মহত্যা কমানোর জন্য সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। এক্ষেত্রে সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও গ্রাম-বাজারগুলোতে উঠান বৈঠক করে সচেতনতা সৃষ্টি করে আত্মহত্যা কমানো সম্ভব। এক্ষেত্রে পরিবার ও সমাজের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন বলেন, বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এসব আত্মহত্যার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট কিছু কারণ পেয়েছে। এর মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন কলহ, মানসিক বিপর্যয়, ঋণ এবং প্রেমসংক্রান্ত বিষয় বেশি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, আত্মহত্যা রোধে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় সভা-সেমিনারে জনসচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে এসব সভা সেমিনার আরো বৃদ্ধিরা হবে।