ছেলের অঙ্ক পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনজন শিক্ষককে গালাগাল ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বেনজির আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। তিনি ওই বিদ্যালয়েরই পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
গত রোববার সকালে নাটোরের গুরুদাসপুরের ১৩ নম্বর নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ওই তিন শিক্ষকের ভাষ্য, সভাপতির ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। গতকাল শনিবার তার অঙ্ক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাসের অন্যদের পরীক্ষা ভালো হলেও ছেলের পরীক্ষা ভালো হয়নি দাবি করে সভাপতি বেনজির আজ সকালে বিদ্যালয়ে এসে হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি সহকারী শিক্ষক বিপ্লব রানাকে ধাক্কা দিয়ে চেয়ার উঁচিয়ে মারার চেষ্টা করেন। তাঁকে নিবৃত্ত করতে আরেক শিক্ষক জিয়াউল হক এগিয়ে এলে তাঁকেও ধাক্কা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। বেনজিরকে থামাতে প্রধান শিক্ষক মোছাম্মৎ নাজমা খাতুন এগিয়ে এলে তাঁকেও গালমন্দ করেন তিনি। একপর্যায়ে টেবিলে থাকা কাঁচি ও চাকু হাতে নিয়ে প্রধান শিক্ষককে ভয় দেখান বেনজির। একই সঙ্গে তাঁর ছেলের পরীক্ষা খারাপ হওয়ার ব্যাখ্যা জানতে চান।
প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই বেনজির আহম্মেদ সব শিক্ষকের সঙ্গে নানা কারণে খারাপ আচরণ করছেন। আজকের ঘটনাটি শিক্ষকদের জন্য অপমানের। প্রতিকার পেতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
তবে বেনজির তাঁর বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পরীক্ষার হলেই শিক্ষক বিপ্লব রানা আমার ছেলেকে মারধর করে। এতে আমার ছেলের পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। এর কারণ জানতে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে এক শিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়নি। সভাপতি নিজের অপকর্ম আড়াল করতেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষকদের অভিযোগ পাওয়ার পর একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিদ্যালয়টিতে পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দাখিলের পর পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
অবশেষে, গতকাল বৃহঃপতিবার নাটোরের আদালতে আত্মসমার্পণ করেন বলে জানান গুরুদাসপুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আনারুল ইসলাম।