নাটোরের গুরুদাসপুরে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধুর না রাত্রী (২২), তিনি একই এলাকার রঞ্জু প্রামাণিকের মেয়ে।
শুক্রবার(৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলা পৌর সদরের খামার চাচকৈড় খোয়াড়পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূর বাবা রঞ্জু প্রামাণিক বাদি হয়ে মেয়ের স্বামী মো. নাঈম হোসেন (২৭) ও শাশুড়ি আরবি বেগমের (৫০) নামে হত্যা মামলা করেছেন।
রাত্রীর স্বামী ও শাশুড়ি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে পৌর সদরের সিমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, খোয়াড়পাড়ার নাঈমের সাথে চার বছর আগে একই মহল্লার রঞ্জু প্রামাণিকের মেয়ের বিয়ে। বিয়ের আড়াই বছর পর তাদের মেয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হতো রাত্রীকে। গতকাল শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে রাত্রীকে দেখতে আসেন তার মা ফরিদা বেগম। মেয়ে রাত্রীকে ফরিদা বেগম বলেন, একজন একটি পুরাতন গ্যাসের চুলা বিক্রি করবে, সেই চুলা রাত্রী নেবে কিনা। পরে চুলা কেনাকে কেন্দ্র করে রাত্রীর মা ফরিদা বেগম ও রাত্রীর সাথে শাশুড়ি আরবি বেগম ও স্বামী নাঈম হোসেনের বিবাদ হয়। একপর্যায় রাত্রীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে স্বামী ও শাশুড়ি। পরে শুক্রবার গভীর রাতে নাঈম হোসেনের বাড়িতে রাত্রীর চিৎকার শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা রাত্রীর গলায় রশি পেচানো ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।
নাঈম-রাত্রী দম্পতির প্রতিবেশি রুমা বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিন স্বামী ও শাশুড়ি মিলে রাত্রীকে নির্যাতন চালাত। শুক্রবারেও অনেক নির্যাতন করেছে।’
রাত্রীর মা ফরিদা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে একটি পুরাতন গ্যাসের চুলা কিনতে চেয়েছিল। পুরাতন চুলার খোঁজ পাওয়ার পর আমার মেয়ের শশুরবাড়িতে গিয়ে নিবে কিনা জিজ্ঞেস করতে গেলে আমার সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তার শাশুড়ি আরবি বেগম। তারপর আমি রাগ করে চলে আসি। একপর্যায় প্রতিবেশিদের কাছে শুনতে পাই, গভীর রাতে আমার মেয়েকে পিটিয়ে রশিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর কঠিন শাস্তি দাবি করছি।’
রাত্রীর বাবা রঞ্জু প্রামাণিক বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। অবশেষে তারা আমার মেয়েকে হত্যা করল। আমি এর কঠিন বিচার দাবি করছি।’
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন বলেন, ‘গৃহবধূ রাত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শাশুড়িকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা করেছেন গৃহবধুর বাবা। রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদনের জন্য নাটোর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’