নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের পিতা হাসান আলী সরদারকে প্রকাশিত বইয়ে রাজাকার হিসেবে লিপিবদ্ধ করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলা বিভাগের সভাপতি ও গবেষক ড. সুজিত সরকার এবং সংবাদ সম্মেলনে রাজাকার হিসেবে আখ্যায়িত করায় নাটোর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপনকে আসামী করে আদালতে একটি মানহানীর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুপুরে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলের ছোট ভাই সাজেদুল ইসলাম সাগর।
মামলার বিবরণে বলা হয়, গত ২৫ জুলাই স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে নাটোর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন এক সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সভাপতি সুজিত কুমার সরকার এর লেখা ‘নাটোর জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ এবং ‘নাটোর জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ’ নামক গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের পিতাকে রাজাকার বা স্বাধীনতা বিরোধি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এছাড়া সাংসদ শিমুলকে রাজাকারের সন্তান বলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ নিয়ে সাংসদ শিমুল ও তার পরিবার, রাজনৈতিকভাবে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন এবং মানহানী হয়েছে বলে মামলার বিবরণে বলা হয়।
এ সময় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরিফ হোসেন আসামীদের স্ব শরীরে হাজির হয়ে ব্যাখা দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান।
কিন্তু বিচারক এফএম গোলজার রহমান বিচার বিশ্লেষণ করে মধ্যাহ্ন বিরতির পর আদেশ দেওয়া হবে বলে আইনজীবীকে জানান।
এসময় আদালতে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস, জেলা যুবলীগ সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরি এহিয়া, স্বেচ্ছাসেবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সেলিম, মহিলা নেত্রী রতœা পারভিন, আইনজীবী সায়েম হোসেন উজ্জল, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী সাজেদুল ইসলাম সাগর জানান, আমার পিতা হাসান আলী সরদারকে সংবাদ সম্মেলন করে রাজাকার আখ্যায়িত করা এবং আমার বড়ভাই সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলকে রাজাকারের সন্তান বলায় আমি এই মানহানীর মামলাটি করেছি।
মামলার ১নং আসামী ড. সুজিত সরকার জানান, মামলার কথা শুনেছি। আমি যেই তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে আমার প্রকাশিত গ্রন্থে হাসান আলী সরদারকে রাজাকারের তালিকায় লিপিবদ্ধ করেছি সেই তথ্য প্রমাণসমূহ আদালতে উপস্থাপন করবো।
২০০৯ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আহাদ আলী সরকারের কথায় হাসান আলী সরদারকে রাজাকারের তালিকাভুক্ত করেছেন বলে একটি অভিযোগ আছে সে ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী -এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. সুজিত সরকার বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেননা হাসান আলী সরদার কে বা তার পরিবারের সদস্যদেরকে আমি কখনও দেখিনি এবং চিনিনা। অতএব তাদের ব্যাপারে কারও ইন্ধনে তো প্রশ্নই ওঠেনা বরং স্থানীয় বহু মানুষের সাথে এবং নাটোরের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে সাক্ষাতকার শুনে যাচাই বাছাই করে উপযুক্ত প্রমাণ পেয়েই লিপিবদ্ধ করেছি।
মামলার অপর আসামী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন উত্তর কণ্ঠকে জানান, যেহেতু মামলা হয়েছে সেহেতু আদালতের প্রতি সম্মান রেখে আইনগতভাবেই এটি মোকাবেলা করবো।