সৈয়দ মাসুম রেজা, নাটোর প্রতিনিধি:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, অবৈধ স্রৌতি জাল স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে এবং স্রৌতি জাল অপসারণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এই কার্যক্রমকে আরো বেগবান করা হবে। এসময় তিনি বিশেষভাবে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, অবৈধ স্রৌতি জাল স্থাপনকারী আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সবসময় অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে। এই ধারাবাহিকতায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে আছে সরকার।
প্রতিমন্ত্রী আজ শুক্রবার বিকেলে জেলার সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়ায় আত্রাই নদীর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এলাকা পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন। তিনি গৃহহীন ক্ষতিগ্রস্ত শোলাকুড়া ও সোহাগপুর এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেন এবং প্রবল স্রোতধারার আত্রাই নদীতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ১০ হাজার সিনথেটিক জিও ব্যাগ প্রতিস্থাপন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পানি এবং অতিবৃষ্টিতে চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়াতে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রকৃতি সৃষ্ট কারণ ছাড়াও অবৈধ মাছ শিকারে নদীতে আড়াআড়ি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্রৌতি জাল স্থাপনের কারণে নদীর পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়ে পানির প্রবল চাপে বাঁধ ভেঙে বিল প্লাবিত হয়েছে। এতে বিলের তিন হাজার হেক্টর জমির রোপা আমনসহ অন্যান্য ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। শতাধিক জনবসতি ভাঙনে বিলিন হয়েছে। আরো শতাধিক বাড়ি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে।
পলক আরো বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাঘবে উপজেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম থেকে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা জেলার জন্যে অতিরিক্ত ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছেন। বন্যার পানি নেমে গেলে বসতবাড়ি হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এসময় প্রতিমন্ত্রীর সাথে ছিলেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানু, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সিংড়া পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল পর্যন্ত বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদীর পানি সিংড়ার শোলাকুড়া ও হিয়াতপুর এলাকার বাঁধ ভেঙে চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।