ছবির ছেলেটির নাম আবু সালেহ ।
৭১ এ ছিলেন বিঃবাড়িয়ার কসবা উচ্চ বিদ্যালয়ে’র ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র । যুদ্ধ শুরু হলে অন্য অনেকের সাথে সেও উপস্থিত হলেন আগরতলায়। লক্ষ্য যুদ্ধ করবেন ।
কিন্তু বয়স কম বিবেচনায় বাদ পড়তেই ভেঙে পড়লেন কান্নায় । নজর এড়ালো না রিক্রুট অফিসারে’র । তার দৃঢ় একাগ্রতায় মুগ্ধ হয়ে দলভুক্ত করে পাঠিয়ে দিলেন মেঘালয়ে ট্রেনিং নিতে । নিলেন ট্রেনিং । এবার রণাঙ্গনের যুদ্ধে যাবার অপেক্ষা ।
এলো ডাক …
এতটুকু ভয় নেই চোখেমুখে , উল্টো যুদ্ধ জয়ের দৃঢ়তা । সম্মুখ সমরে সামিল হলেন চন্দ্রপুর নামক গ্রামে । এক সময় দলনেতা বুঝতে পারলেন পাকিস্তানীদের ভারী ও ব্যাপক অস্ত্রের সাথে পেরে উঠবেন না । সেক্ষেত্রে কৌশল হলো পিছনে হঠা।
কিন্তু অন্যদের পিছনে হঠার সুযোগ পেতে হলে কাউকে অবশ্যই কভার করতে হয় । ঐ টুকু বয়সের অকুতোভয় সালেহ নাছোড়বান্দা – – –
সেই করবে কভার । হলোও তাই ।
বয়সের তুলনায় ভারী অস্ত্র হাতে গলা অব্দি বাংকারে ডুবিয়ে নাগাড়ে করে গেলেন ফায়ার । সহযোদ্ধারা সকলেই সরে গেলেন নিরাপদে । তবু থামলেন না সালেহ ।
চারদিকে অন্ধকার । মুহূর্মুহু কেবল গুলির শব্দ ।
ওদিকে পাকিস্তানীদের ধারণা জন্মালো , মুক্তিবাহিনী বুঝি সংখ্যায় এবং অস্ত্রে যথেষ্ট । ফলে সেইরাতে তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতি মেনে নিয়ে পাকিস্তানীরাও হঠে গেল পিছনে ।
গোলাগুলির অবসান হলে দলপতি খুঁজতে এলেন তার ক্ষুদে যোদ্ধাকে । ভাবছিলেন শহীদের নিথর দেহটা না জানি তপ্ত সীসার আঘাতে কতটা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে !
কিন্তু না ,
বীর সালেহ চুপচাপ বসে ছিলেন বাংকারের অন্ধকারে ।
এইসব অগনিত বীর সালেহ’দের অকুতোভয় বীরত্বের বিনিময়ে এসেছে স্বাধীনতা । বীর সালেহ’রা খ্যাতি পাননি কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কখনোই পালিয়ে যাননি । বরং ঢাল হয়ে থেকেছেন সহযোদ্ধার ।
বীরভূমি’র বীর সন্তান সালেহ ❤❤
আপনাকে স্যালুট ❤❤
(সাজ্জাদ হোসেন স্বাগরের ফেইসবুক থেকে)